সৈয়দ আরিফ উল্যাহ
সৈয়দ আরিফ উল্যাহ এর বংশ পরিচয় ও আত্মজীবনীঃ

আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!

আমার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা জানার জন্য- এখানে ক্লিক করুন

আমার কনটেক্ট এড্রেস জানতে-এখানে ক্লিক করুন

আমার full info সম্পর্কে জানতে- এখানে ক্লিক করুন

আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমার শ্রদ্ধেয় মরহুম বাবা আমার নাম রেখেছেন আরিফ উল্যাহ চৌধুরী। ভাইদের নামের শুরুতে অবশ্য এস এম দিয়ে শরু করেছিলেন। আমার নামের শুরুতেও দিয়েছিলেন। 

কিন্তু আমাকে যখন স্কুলে ভর্তি করাতে নিলেন, তখন স্কুলের স্যারেরা, স্কুলে আমার নাম এন্ট্রি করার সময়, নামটি বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে বলে, নামের শুরুতে এস এম, এ দু'টি শব্দ বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন। যা বাবাকে একদিন আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম এবং বাবা আমায় এরূপই বলেছিলেন।

আমার নামটি, আরবী ভাষা হতে উৎপত্তি এবং মুসলিম সম্প্রদায়ভূক্ত নাম। এর অর্থ আমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহু তা'য়ালার পরিচয় দানকারী।

তাই আমি যেন আমার নামের এ অর্থকে স্বার্থক করতে পারি, এ জন্য লিখার শুরুতেই, আমি সকলের নিকট দোয়া কামনা করে এবং পরম করুণাময়ের নামে ও তাঁরই শক্তিতে লিখা আরম্ভ করছি। আল্লাহু তা'য়ালা তাওফিক দিলে, যা আমার মৃত্যু পর্যন্ত চলবে ইনশা'আল্লাহ।

 আমরা ৩ ভাই; ২ বোন। ভাইদের মধ্যে আমি সবার ছোট। 

আমার বড় ভাই থেকে ক্রমান্বয়ে আমাদের সকল ভাই-বোনদের নাম নিম্নে উল্লেখ করলাম-

১। এস এম শহীদুল্লাহ চৌধুরী

২। হারিছা আক্তার

৩। রোকেয়া আক্তার

৪। হাছিনা আক্তার

৫। সেলিনা আক্তার

৬। এস এম শরাফত উল্যাহ চৌধুরী

৭। আরিফ উল্যাহ চৌধুরী

উপর্যুক্ত ৩ নং ও ৪ নং ক্রমিকে উল্লেখিত আমার এ ২ জন বোন, আমার জন্মের অনেক আগে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। রোকেয়া আক্তার, তিনি মারা গিয়েছিলেন ধনুষ্টংকারে আক্রান্ত হয়ে তার ৮ বছর বয়সের সময়। এবং হাছিনা আক্তার, তিনি মারা গিয়েছিলেন রক্ত আমাশয়ে আক্রান্ত হয়ে তার ৯ বছর বয়সের সময়। যা আমার মা আমাকে বলেছেন।

আমি সর্ব শক্তিমান আল্লাহু তা'য়ালার নিকট আমার মরহুমা এ ২ বোনের জন্য জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চাসন কামনা করছি; যেহেতু তাঁরা ছোট বয়সেই মারা গিয়েছেন। এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চাসনে আমার বোনদের সাথে আমি যাতে, আমার ইন্তেকালের পর পরই দেখা করতে পারি, আমার মহান রবের নিকট আমি এ প্রার্থনা করছি।

যেহেতু আমার জন্মেরও অনেক আগে আমার এ দু'বোন মারা গিয়েছিলো, তাই উপরে আমি আমার বোন ২ জন বলে উল্লেখ করেছি। অর্থাৎ শুধু যে ২ জন জীবীত আছেন, তাদের কথা বলেছি।

তার মানে মৃত এ ২ বোন সহ আমরা ৩ ভাই ও ৪ বোন। অর্থাৎ আমার মা-বাবা ৭ সন্তানের জনক ও জননী।

আমার বাবার নাম ছিদ্দিক আহাম্মদ। বাংলাদেশী এনআইডি কার্ড অনুযায়ী তাঁর জন্ম তারিখ ছিলো ০১ জানুয়ারী ১৯২৭। তাঁর বাবার নাম, মানে আমার দাদার নাম মৃত আবদুর রহমান এবং তাঁর মায়ের নাম, মানে আমার দাদুর নাম মৃত আফজল বিয়া। তাঁর (আমার বাবার) এন আই ডি নাম্বার 3012943174557. তাঁর স্হায়ী ঠিকানাঃ ১২৩ গোবিন্দপুর, হাজীর বাজার-৩৯০০, ফেনী সদর, ফেনী। 

তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ভূক্ত ছিলেন এবং জন্ম সূত্রে বাংলাদেশী নাগরিক ছিলেন।

আমার বাবার মৃত্যু তারিখঃ ০৬ নভেম্বর ২০১২

কাগজ-কলম অনুযায়ী মৃত্যুকালে আমার বাবার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর ১০ মাস ৫ দিন।

আমি আমার বাবার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর জন্য জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চাসন কামনা করছি।

আমার মায়ের নাম হালিমা খাতুন। তাঁর মায়ের, মানে আমার নানুর নাম মৃত আছিয়া খাতুন। আমার মায়ের জন্ম তারিখঃ ০১ জুলাই ১৯৪৮. তাঁর এন আই ডি নম্বরঃ 3012943174560. এন আই ডি কার্ড অনুযায়ী আমার মায়ের বর্তমান বয়স ৭৬ বছর ৫ মাস ২৭ দিন। আল্লাহু তা'য়ালার অশেষ মেহেরবানীতে আমার মা এখনো জীবীত আছেন (২০২৫ ইং)।

যে বাড়িতে আমার মায়ের জন্ম, আমার নানার সে বাড়িটি ছিলো বাংলাদেশের ফেনী জেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মজুপুর গ্রামে। কিন্তু পরে তারা এ ঠিকানাটি স্থায়ী ভাবে ছেড়ে দিয়ে, দাঁতমারা বাজার, চট্টগ্রাম (হেঁয়াকোঁ) এ পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী ভাবে বসতি স্থাপন করেন এবং বর্তমানেও সেখানেই আছেন। ফেনীর দৌলতপুরে এখন আর তাদের কিছুই অবশিষ্ট্য নেই। তারা এখন স্থায়ী ভাবে দাঁতমারা বাজার, এ পার্বত্য অঞ্চলেই থাকেন। অর্থাৎ আমার মরহুম নানার বর্তমানকার স্থায়ী ঠিকানা- দাঁতমারা বাজার, চট্টগ্রাম। 

আমার মা ইয়াতিম ছিলেন। আমার মায়ের শিশু বয়সে, মানে একেবারেই কম বয়সে, মায়ের নানা, আমার নানার ইনকাম না থাকার দোহাই দিয়ে নাকি আমার নানুকে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে বাধ্য করে আমার নানুকে নিয়ে যান। এরপর আমার মাকে নিয়ে, আমার নানা পড়েন একেবারে মহা বিপদে। আমার নানা কাঠ মিস্ত্রী ছিলেন। তাই যেদিকে কাজে যেতেন, আমার মাকে কোলে করে বা সাথে করে নিয়ে যেতেন। কারণ বাড়িতে আমার মাকে দেখা-শুনা করার মতো, এ রকম কেউ ছিলো না। অবশেষে আমার মাকে, আমার নানা দত্তক দিতে বাধ্য হন এবং তখন তাঁকে দত্তক আনেন আমাদের সমাজের হাবিবুর রহমান মাস্টার বাড়িতে উনাদের মুরুব্বীরা। এ বাড়িতেই আমার মায়ের শিশুকাল অতিবাহিত হয়।

আমার মা সৈয়দ বংশীয় এবং জন্ম সূত্রে বাংলাদেশী নাগরিক। আমার মায়ের কথা অনুযায়ী তাঁর নিজ নানা সৈয়দ বংশীয় ছিলো। তিনি হাফেজ ও আলেম ছিলেন। তিনি পালকি করে এদিক সেদিক যাওয়া আসা করতেন। তিনি কারো রান্না করা খাওয়ার খেতেন না। পালকিটি বহন করার জন্য ৪/৫ জন লোক নিয়োজিত ছিলো। তারাই খাওয়ার দাওয়ার রান্না করতেন এবং নানার সব ধরনের সেবা যত্ন নিতেন।

প্রতি রমজানে আমার মায়ের সেই নানা মসজিদে খতমে তারাবী পড়াতেন। তিনি নাকি একবার আমাদের সামাজিক মসজিদ, তিতার কান্দি আলী মুন্সী জামে মসজিদেও খতমে তারাবী পড়িয়েছেন।

আমার মা, আমার মায়ের সেই সৈয়দ নানার ভাগ্নি ঘরের মেয়ে। মানে তিনি, তাঁর এ নানার বোনের মেয়ের মেয়ে।

এ সব কিছু আমার মা থেকে শুনে অবিকল আমি লিখেছি এবং এ বিষয়ক অসংখ্য কন্টেন্ট আমি ফেসবুকে শেয়ার করেছি। যে কন্টেন্ট গুলো আমার ভাই-বোন সহ, পাড়া-প্রতিবেশীর প্রায় প্রত্যেক সচেতন মানুষ দেখেছে ও পড়েছে। আপনারা নিম্নের লিংকে ক্লিক করে অথবা লিংকটি কপি করে গুগলে পেস্ট করে ও সার্চিং করে এ সংশ্লিষ্ট কন্টেন্ট সমূহ পড়ার মাধ্যমে বিষয়টি আরো ভালো ভাবে জানতে পারবেন। লিংকটি নিম্নরূপ-

https://jinmanb.blogspot.com/

আমার মা-- যে সৈয়দ বংশীয়, এটা আমার ভাই-বোন, বাড়ির অন্যান্য লোকজন ও এলাকাবাসী এবং আমার সঙ্গে থাকা জ্বীন বা জ্বীন সম্প্রদায় কর্তৃক ভেরিফায়েডকৃত। কারণ এ বিষয়ে আমার মা যদি মিথ্যা বলতেন, তাহলে এক ভাবে না এক ভাবে তা প্রকাশিত হয়ে যেতো। যেহেতু এ বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে আমি অনেকগুলো কন্টেন্ট ফেসবুকে পাবলিস্ট করেছিলাম। যা আমার আত্মীয়-স্বজন সহ এলাকাবাসী পড়েছিলো। যা এখনো আপনারা এখানে ক্লিক করে ও এ বিষয়টি খুঁজে নিয়ে পড়ে নিতে পারেন।

অতএব, আমার মায়ের নানা যেহেতু সৈয়দ বংশের এবং সৈয়দ বংশ যেহেতু পিতৃকূল ও মাতৃকূল, উভয়দিক থেকেই হতে পারে; উভয় রিলেশনই যেহেতু অনুমোদন করে; সে বিবেচনায় আমার মা অবশ্যই সৈয়দ বংশীয় সদস্য। আর আমার মা যদি সৈয়দ বংশীয় সদস্য হন; সে সুবাধে আমিও সৈয়দ বংশীয় সদস্য। 

মুসলিম ঘরে জন্ম গ্রহণ করলে যেমন ঈমান থাকা ছাড়া প্রকৃত মুসলিম হওয়া যায় না; তেমনি সৈয়দ বংশে জন্মগ্রহণ করেও সৈয়দ হওয়া যায় না। আল্লাহ কবূল করতে হয়।

তো আমি আমার মহান রবের প্রতি কায়মনোবাক্যে এই প্রার্থনা করবো যে, (সাঃ) ইয়া আল্লাহু তা'য়ালা! আমার ও আমার ছেলে-মেয়েদের নামের পূর্বে সৈয়দ সংযোজনের এবং আমার নামের শেষে চৌধুরী বাতিলের তাওফিক দাও। এবং আমাদেরকে তোমার রাসূলের ওয়ারিশ হিসেবে কবূল কর। ও রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর বংশধর হিসেবে, পবিত্র কোরআনের ঘোষণা অনুযায়ী আমাদেরকে পবিত্র কর, হেফাজত কর ও সম্মানিত কর। আমীন। (সাঃ)।

এদিকে এন আই ডি কার্ডে আমার মা ও বাবার যে জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, তা আসলে সত্য নয়। কারণ বাংলাদেশ সরকার এন আই ডি কার্ড বানিয়েছে মাত্র কিছু বছর হলো। এ দেশের সরকার এন আই ডি কার্ড  বানানো আরম্ভ করেছিলো আমার মায়ের জন্মের কমপক্ষে ৪৫ বছর পরে। ফলে এটি বানানোর সময় অনুমান করে একটি ডেট বসানো হয়েছিলো। 

বাস্তবে আমার বাবা আনুমানিক প্রায় ৯৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন এবং আমার মায়ের বর্তমান বয়স প্রায় ৯৬ বছরের মত হবে (২৪/১২/২০২৪ এর হিসাব অনুযায়ী; যা আমার বাবার ইন্তেকালের প্রায় ১২ বছর পরে হিসাবকৃত)।

আমার জেঠাতো ভায়েরা ২ জন। বড় জন বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স কর্তৃপক্ষের অধীন সিভিল এভিয়েশনের যোগাযোগ সহকারী, ২য় শ্রেণির পদবীধারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর পেনশন সহ অবসর প্রাপ্ত। তার নাম মহিউদ্দিন চৌধূরী। এবং অপরজন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে কর্মরত। তার নাম আবু জাফর মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন।

আমার জেঠার ৪ মেয়ে, সবাই বিবাহিতা এবং তারা যার যার বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত।

বাড়িতে জেঠাদের সাইড এবং আমরা ছাড়া, আর কেউ নেই। 

১০ ফুট সরকারি পাকা রাস্তার সাথে আমাদের বাড়ি। সরকারি রাস্তা থেকে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করার আমাদের নিজস্ব ১০ ফুট প্রবেশ রাস্তা ও আমাদের উঠান; সবই পাকা করা। শহর থেকে গাড়ি নিয়ে একেবারে কোনরূপ কাদামাটি ব্যতিত সরাসরি ঘরের দরজায় হাজির হওয়া যায়। বাড়িতে ছাদ করা একতলা, দোতলা এবং সাইড ওয়াল করা ও উপরে টিন বিশিষ্ট ঘর রয়েছে (২০২৫ ইং)। বাড়িতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ইন্টারন্যাট ব্রডব্যন্ডের লাইন রয়েছে। বেশ নিরিবিলি, পরিপাটি ও চিমচাম আমাদের বর্তমান বাড়ি।

আমার মায়ের মুখের ভাষ্য অনুযায়ী আমার দাদার বাড়ি ছিলো ধলিয়া ইউনিয়নের বাঘের হাট গ্রামে। তিনি মোটামুটি ধনী ছিলেন। সুতরাং তার বাড়িও ছিলো মোটামুটি বড় ও প্রতিষ্ঠিত গোচের। বাড়ির নাম ছিলো নাকি তোপাদ্দর বাড়ি।

রোগ না একসিডেন্ট বা কী কারণে যেন আমার দাদার মা-বাবা সহ সকলে মারা যায়। বেঁচে থাকে শুধু আমার দাদা, আর তার বড় এক বোন। তখন পাড়া-প্রতিবেশিগণ বোনটিকে নাকি মরুয়ার চর, আমাদের নিকটতম একটি গ্রামের কোথায় যেন, কোন এক পয়সাওয়ালা পরিবারে বিয়ে দিয়ে দেয়। আর আমার দাদা তখন ছিলো নাকি একেবারেই শিশু বয়সের। মানে এতিম। তখন আমার দাদাকে দত্তক আনে, আমাদের বর্তমান বাড়ির পাশের বাড়ি জুলফিকার সওদাগর বাড়ির পূর্বপূরুষগণ। আমার দাদার সেই পৈত্রিক বাড়ির কোন সম্পত্তি বা এর কোন পরিচয়ও আমার বাবা বা আমরা, কেউই পাইনি। আমার দাদা বড় হওয়ার পর, তাঁর কোন পৈত্রিক সম্পত্তি, তিনি বা তাঁর পক্ষে আমার বাবা, কেন আনতে পারেন নাই; এ বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা।

প্রিয় পাঠক, চিন্তা করুন, আমার মা'ও এতিম, আমার দাদাও এতিম। উভয়কেই এ গ্রামে দত্তক আনা হয়। মানে এ গোবিন্দপুর গ্রামে আমাদের স্থায়ী কোন আদি নিবাস ছিলো না; এখানে আমাদের অতীত সূত্র ছিন্নমূল ছাড়া আর কিছু না। অর্থাৎ আমি প্রায় এতিম বংশের সন্তান। অর্থাৎ এখানে না ছিলো আমাদের এক ইঞ্চি সম্পত্তি এবং না ছিলো আমাদের কোন সম্মানজনক অবস্থান।

তো পালিত হিসেবে জুলফিকার আলী সওদাগর বাড়িতে আমার দাদার বয়স যখন ১১/১২ বছর হয়েছিলো; তখন আমার দাদা নাকি পালিয়ে বার্মা চলে যায় কাজের সন্ধানে। এখন যেমন মানুষ কাজের সন্ধানে ইউরোপ, মিডেলিস্ট ইত্যাদি স্থানে যায়; তখন বাংলাদেশের মানুষ বার্মা শহরে যেত।

দাদার যৌবনকালে দাদা বার্মা থেকে আবার এ গ্রামে ফিরে আসেন এবং জুলফিকার সওদাগর বাড়ির পাশে এবং নিকটেই ও এ গ্রামের মধ্যে হাজী নূরের জামান সওদাগর বাড়িতে অল্প কিছু জায়গা ক্রয় করে এখানেই কোন মতে একটি ঘর দিয়ে এখানেই বসত গড়েন ও বাস করতে থাকেন।

আমার দাদা তার পাশের বাড়ির, মানে জহিরুদ্দীন হাফেজের বাড়ীর, বর্তমানে যিনি, আমাদের সামাজিক মসজিদের পাঞ্জেগানা ঈমাম সাহেব, তাঁর বাবার বোন, মানে তাঁর ফুফুকে বিয়ে করেন। আমার এ পাঞ্জেগানা ঈমাম কাকার নাম মৌলভী আবু তাহের।

আমার দাদার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে ছিলো। অবশ্য ছোট মেয়েটি নাকি ৩ বছর বয়সে আমাশয় রোগে মারা যায়। আর আমার বাকি ফুফুকে বিয়ে দেয়া হয় পার্শ্ববর্তী কাতালিয়া গ্রামে।

আমার দাদার ডানপিঠে স্বভাবের ছোট সন্তান হিসেবে আমার বাবা বৃটিশ শাসনামলে বাড়ি থেকে পালিয়ে, অর্থাৎ কাউকে কিছু না জানিয়ে ভারতীয় আর্মিতে যোগদান করেন এবং আর্মীতে থেকে আর্মী মেডিকেল কোরের সদস্য হিসেবে 'মেডিকেল এসিসটেন্ট' কোর্সটি সফলতার সহিত উত্তীর্ণ হন। তখন এ কোর্সটি পরিচালিত হয়েছিলো সম্পূর্ণ ইংরেজ আর্মী ডাক্তারদের দ্বারা। মানে এ কোর্সটি পরিচালিত হয়েছিলো শুধুই ইংরেজী ভাষায়।

প্রিয় পাঠক, এখানে আপনাদেরকে একটা বিষয় ভাবতে অনুরোধ করবো, একটা বাঙ্গালী পরিবারের গ্রাম্য, অপ্রশিক্ষিত ও ভীরু অঞ্চলের প্রায় বালক মানুষ, সেই বৃটিশ শাসনামলে সুবিধা বঞ্চিত গেঁও স্বভাব ও গেঁও বাংলা জানে ওয়ালা মানুষ কেমন করে ইংরেজ কর্তৃক পরিচালিত সম্পূর্ণ ও শুধুই ইংরেজী ভাষায় মেডিকেল এসিসট্যান্ট এর মতো একটি কোর্স পাশ করতে পারে!? যে কোর্সটি বর্তমানে এস এস সি'র পর ৪ বছর মেয়াদে পরিচালিত হয় এবং এ কোর্সটি পাশ করে বর্তমানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মতো ২য় শ্রেণীর চাকুরী করে অনেকটা সম্মানী হয়েই জীবন-যাপন করছে এ দেশের মানুষেরা!

শুধু তাই নয়; কোর্সটি চলা কালীন আমার বাবার যে কেউ খোঁজ নিবেন, এ রকমওতো কেউ ছিলো না! তাঁকে কেউ আদর-যত্ন করা গিয়ে দূরে থাক! যাক, আমার বাবা হয়তো আল্লাহর বিশেষ কোন রহমতেই হয়তো এটি পেরেছিলেন!

এ কোর্সটি পাশের পর আমার বাবা, বৃটিশ আর্মি পরিচালিত হাসপাতালের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন এবং সেখানে নিজেই চিকিৎসা সেবা দিতেন। বড় ডাক্তারগণ হয়তো কোনদিন আসতোও না। বাবার মুখে শুনেছি; আসলেও তারা প্রয়োজনে আসতেন, কার্য সমাধার পর আবার চলে যেতেন। হাসপাতালের আভ্যন্তরিন যত পরিচালনা ও কর্ম আমার বাবাই সমাধা দিতেন এবং যা আমার বাবার নের্তৃত্বেই চলতো।

একটু চিন্তা করুন; বর্তমানকার আধুনিক সময়কার বাংলাদেশের; যখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইংরেজী ভাষার দু'চারটি শব্দ মানুষ এমনিতেই জানে; এখনো আমাদের গ্রাম গুলোর ১৩/১৪ বছর বয়সের ছেলেগুলোকে যদি বলা হয়; ফুল ইংরেজীতে, ইংলিশ মিডিয়ামে এ রকম একটি কোর্সে ভর্তি হয়ে পাশ করতে; তাহলে কয়জন পারবে বলেন!? তার উপর আমার বাবাকে যে মানসিক সাপোর্ট দিবে, তাঁর পাশে, তাঁর পরিবার থেকে, বা কেউ'ই এ রকম ছিলো না। এমনকি অভিভাবক হিসেবে বা আপনজন হিসেবে যোগাযোগ করার মতো বা পরিচয় দেয়ার মতোও কেউ ছিলো না। এছাড়া তখন চলছিলো জাপান ও বৃটিশের যুদ্ধ। এছাড়াও এর কিছু দিনের মধ্যেই আরম্ভ হয়েছিলো হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে মারামারি আর কাটাকাটি, মানে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা। অন্যদিকে তখনকার সমাজে এমনিতেই সেনাবাহিনীতে ভর্তি হওয়ার মতো এতো দূঃসাহস তখনকার মানুষদের ছিলো না। তার উপর আরো বাড়টি ঝামেলা ছিলো; আমার দেশের মুসলমান গণ অনেকেই তখন ইংরেজী শিক্ষা হারাম বলে জানতেন। তারউপর বাবার ছিলো না কোন পূর্ব প্রস্তুতি বা ট্রেনিং। সব মিলিয়ে আমার বাবা শত বছরেরও অধিক আগে যে কাজটি করে আমাদের পরিবার ও বংশকে একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন; আজ বাংলার ছেলেরা কয়জনে পারবে, এ রকম একটি কাজ করতে!? আমার মনে হয়, আমার বাবার মতো এতো দূঃসাহসিক ও মেধাবী বালক অন্তত বাংলাদেশের গ্রাম গুলোতে এমনকি এ দেশের শহরেও আপনারা এখন পর্যন্তও খুব একটা খুঁজে পাবেন না।

আমার বাবার এ তীক্ষ্ণ মেধা শক্তি, সাধনা ও অধ্যবসায়কে আমি কৃতজ্ঞতার সহিত স্মরণ করছি! এবং আমি তাঁর এ কাজের ভূয়োশী প্রশংসা করছি!

তেমনি ভাবে আমার জেঠাকেও। আমার জেঠার লেখাপড়ায় সর্বোত ভাবে নাকি সহযোগিতা করেছিলেন জুলফিকার আলী সওদাগর বাড়ির পূরুষগণ।

আমার জেঠা মাদরাসায় লেখাপড়া করেছিলেন এবং আলেম হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। গায়ে শক্তি থাকা পর্যন্ত তিনি মসজিদের ঈমামতি, মাদরাসা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে কাটিয়েছিলেন।

তিনি দানে বিয়ে করেছিলেন। মানে ফাতেমা (রাঃ) এঁর মতো গৃহস্থালিতে প্রয়োজন, এমন সব কিছু তাঁর শশুর, খুশি মনে ও নিজ থেকে, আমার জেঠার বিনা চাহিদায়, তাকে দিয়ে ছিলেন। আমার মরহুম জেঠা তার যৌবনের শুরুতে মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন; এবং পরে তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে পেনশন সহ সম্মানের সহিত রিটার্ড করেন ও এরপর তিনি সু-দীর্ঘ সময় আমাদের গ্রামের মসজিদের ঈমাম ও খতীবের দায়ীত্ব পালন করেন। আমি নিজে দেখেছি আমার মরহুম জেঠা ও বাবা ইন্তেকালের আগের মাস পর্যন্ত সরকারী পেনশন পেয়েছিলেন। 

তার মানে আমার জেঠা মানুষের নিকট মোটামুটি গ্রহণযোগ্য ও ভালোমানুষ ছিলেন। আমি আমার জেঠার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ও তাঁর জন্য মহান রবের নিকট জান্নাতুল ফিরদাউস বেহেশতের উচ্চাসন কামনা করছি।

চাকুরী করা কালীন, আমার বাবা বেশ কিছু জমি ক্রয় করেন এবং তখন থেকে আমার বাবা ও জেঠা সমাজে মোটামুটি সম্মানজনক স্থানে পৌঁছান।

বাবা, দাদা কর্তৃক নির্মিত ঐ হাজী নূরের জামান ভূঞাঁ সওদাগর বাড়িতে, সামান্য ছোট খুপরী ঘরে বিয়ে করতে কিছুতেই রাজী ছিলেন না। তাই তিনি এর সামান্য একটু দূরে নতুন বাড়ি করলেন। যা আমাদের বর্তমান স্থায়ী ঠিকানা। এর পর তিনি বিয়ে করলেন এবং সংসার আরম্ভ করলেন। চাকুরীর সুবাধে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের (ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান; যেহেতু তখন এ ৩টি দেশ একসাথে ছিলো) বিভিন্ন প্রদেশ ও জেলায় দায়িত্ব পালন করেন ও বিভিন্ন ভাষা-বাসি মানুষের সাথে মিলেমিশে জীবন-যাপনের সুযোগ হয়েছিলো তাঁর। তিনি এতো বেশি ইংরেজী জানতেন যে, যা বর্তমানে ইংরেজীতে মাস্টার্স বলেন কি ডক্টরেট বলেন, বাংলাদেশে থেকে এ ধরনের শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করে ইংরেজি জানা কখনোই সম্ভব নয় বলেই আমার মনে হয়। ইংরেজী ছাড়াও তিনি বেশ ভালো হিন্দি ও উর্দ্দু জানতেন। চাকুরীর শেষের দিকে আমার বাবা খুব চেষ্টা করেছিলেন, শহরের দিকে একটা বাড়ি কিনে, শহুরে হয়ে যেতে। একটা বাড়ির দরদাম ঠিকও করেছিলেন; কিন্তু গোবিন্দপুর গ্রামের, তার এ নতুন বাড়িটি (তার অংশ) বিক্রি করতে না পারায় এবং অর্থ সংকটের কারণে তিনি তা করতে পারেননি।

আমার বাবা আজ নেই। কিন্তু বাবার এই দূর্দান্ত সাহসী ও চেলেঞ্জিং জীবন-যাপনকে আমি আবারো সাধুবাদ জানাই।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে তিনি পেনশন সহ অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণ করার পর বেশ কিছু কাল তিনি গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে গ্রামের মানুষদেরকে পল্লি চিকিৎসক হিসেবে সেবা দিয়ে গিয়েছিলেন।

আমার বাবা বেস আধুনিক ও ভদ্র মানুষ ছিলেন। তবে শেষ বয়সে তিনি আমাদের সংসারের হাল টানতে গিয়ে চরম অর্থ সংকটে পড়ে গিয়ে ছিলেন। যেহেতু চাকুরী অনেক আগেই ছেড়ে দিয়ে ছিলেন।

বর্তমানে আমাদের বাড়িতে ও আমাদের বংশে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা, ব্যাংকার, পৌর কর্মকর্তা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সদস্য, হাইস্কুল শিক্ষক, প্রাইমারি শিক্ষক, ইউপি সচিব রয়েছে; এবং বাড়িটি প্রায় শতভাগ শিক্ষিত বাড়ি।

আপনারা লক্ষ্য করেছেন, আমার বর্ণনা অনুযায়ী যে বংশের শুরুটি ছিলো ছিন্নমূল এবং অসম্মানিত; কিন্তু আজ এ বাড়িটির মতো এমন শিক্ষিত বাড়ি গ্রামের মধ্যে আর ২/৪টা এখনো দেখতে পাওয়া যায় না!

আর এর সবই সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র জ্ঞান ও শিক্ষার কারণে। অর্থাৎ আমাদের এগিয়ে যাওয়ার মূল ভিত্তিই হচ্ছে, শুধু শিক্ষা। এ থেকে এ শিক্ষা নেয়া যায় যে, জ্ঞান ও বিদ্যা এমন একটি রত্ন, যা একজন মৃত প্রায় মানুষকেও জীবীত করে সম্মানিত করতে পারে!

তবে প্রিয় পাঠক! আমার বাবার যে স্বপ্ন ছিলো, শহরে বাড়ি করার। তাঁর সে স্বপ্ন তিনি পূরণ করতে পারেননি। আজ আমারও স্বপ্ন, যেহেতু আমার সঙ্গে জ্বীন রয়েছে, তাই তাদের সহায়তায় এ বাড়ির সদস্য হিসেবে, 'মায়ের স্মৃতি' নামে এক অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে নান্দনিক ও অনন্য এক বাড়ি করে; জ্বীন ও জ্বীন জাতির বৈশিষ্ট্য, সক্ষমতা ও কৃতিত্ত্ব বিশ্বের মাঝে তুলে ধরবো। যদি পরী ওপেন হয় এবং সে যদি রাজি থাকে, তবে আমার এ মনবাঞ্চনাটি বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।

প্রিয় পাঠক, আপনাদের দোয়া, আন্তরিকতা ও আল্লাহর রহমত পেলে হয়তো ইনশা'আল্লাহ্ আমি এ বিশ্বের মানচিত্রে আমার ও জ্বীনজাতির পরিচয় প্রদর্শন করে আশা করি আপনাদেরকে খুশি, সন্তুষ্ট, আনন্দিত ও আর্চার্যাম্বিত করতে পারবো।

দেখুন, আমি এখানে আমাদের অহংকার করছি না! আমার ও আমাদের পরিচয় তুলে ধরছি!

প্রিয় বন্ধু! আরো একটু ইঙ্গিত দিতে চাচ্ছি; ইতিপূর্বে আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম। আমার মা একজন সৈয়দ বংশের সদস্য। সে সুবাধে আমিও সৈয়দ বংশীয় সদস্য। আমার বিভিন্ন উপস্বর্গ প্রকাশের মাধ্যমে আমি অনেক আগেই একে সত্য মনে করেছি এবং যা আমি আমার টেক্সট কন্টেন্ট ও ভিডিও কন্টেন্ট এর মাধ্যমে ইতিপূর্বে প্রকাশও করেছিলাম।

পবিত্র কোরআনের সূরা শূরা'র ২৩ নম্বর আয়াতে (৪২:২৩) আল্লাহ তাঁর নবীর প্রতি ভালোবাসার বিনিময়ে তাঁর আত্মীয়-স্বজনের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই আয়াতটি আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরে। 

আপনারা নিম্নের লিংকে ক্লিক করে অথবা লিংকটিকে কপি করে গুগলে পেস্ট করার পর সার্চ করলে এবং ভিডিটি দেখলে বিষয়টি আরো ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। লিংকটি নিম্নরূপ-

https://www.youtube.com/watch?v=QhRq2S6auzA

সে সাথে এ পর্যন্ত আমিও কয়েক সময়'ই বলেছি যে, আমার সাথের এ জ্বীন বা অনেকগুলো জ্বীন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর সাহাবী জ্বীন। যাক আপনারা আমার জ্বীনের বিষয়ে মোটামুটি বুঝতে পেরেছেন যে, আমার সাথে জ্বীন রয়েছে। আবার আমার বিষয়েও এখনো আমার নাম এফিডেভিট করে সৈয়দ নামটিও আমি সংযোজন করতে পারিনি।

হ্যাঁ যদি সত্যিই মহান আল্লাহু তা'য়ালা আমাকে সৈয়দ বংশের সদস্য হিসেবে কবুল করে এবং আমার জ্বীন যদি সত্যিই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর সাহাবী (রাঃ) জ্বীন হয়; তাহলে আজ আপনাদের নিকট আমি চরম অবহেলিত হলেও; তবে ইনশা'আল্লাহ ইহা ১০০% সত্য হবে যে; আমার পজিশন আল্লাহু তা'য়ালা হয়তো এমন এক উন্নত স্থানে নিয়ে যাবে, যা আপনারা হয়তো ভাবতেও পারেন না! এবং আমার এ উন্নত পজিশনের বিষয়ে কল্পণা করার ক্ষমতাও হয়তো কোন মানুষের নেই!

প্রিয় সুধী, ধৈর্য ধরে তাই পড়া চালিয়ে গেলে আমার ও আমার এ জ্বীন জাতের বিষয়ে, অর্থাৎ আমার এ বাস্তব জীবন গল্পের বিষয়ে আরো অনেক কিছুই জানতে পারবেন হয়তো।

যদিও আমার বাবা আমার ও আমার ভাইদের নামের শেষে চৌধুরী, এ বংশীয় পরিচয়টি প্রদান করেন; আমি কিন্তু বাবার দেয়া এ বংশীয় পরিচয়ে থাকতে না চেয়ে, আমার মায়ের বংশ, সৈয়দ হিসেবেই আমার নিজের এবং আমার সন্তানদের পরিচয় প্রদান করি এবং খুব সহসাই আমি আমার মা, আমার এবং আমার সন্তানদের নামের এফিডেভিট করিয়ে চৌধূরী বাদ দেবো ও আমাদের সকলের নামের শুরুতে সৈয়দ সংযোজন করবো ইনশা'আল্লাহু তা'য়ালা। আমার পকেটে টাকা আসলে, প্রথমেই আমি এ কাজটি বাস্তবায়ন করবো ইনশা'আল্লাহ্।

অর্থাৎ আমরা চৌধুরী বংশের সদস্য নই; আমরা সৈয়দ বংশের সদস্য। তার মানে আমার এবং আমার সকল ওয়ারিশের বংশ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বংশ। এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের মাতৃকূল ও পিতৃকূলের দিক থেকে সকলেরই বংশ হবে শুধুমাত্র সৈয়দ বংশ। যার সূচনা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) থেকে এবং এর প্রারম্ভিকতা হযরত আলী (রাঃ) ও হযরত ফাতেমা (রাঃ) থেকে।

অতএব আমরা ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এঁর ওয়ারিশ। 

কিভাবে এবং কোন সূত্রে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর ওয়ারিশ বা সৈয়দ বংশীয় তা বিস্তারিত ভাবে জানতে, আপনারা-

এখানে ক্লিক করতে পারেন

আমার শৈশবঃ

(০-১২ বছর, ১৯৭৬-১৯৮৭ ইং, জন্ম থেকে প্রাথমিক শিক্ষা স্তর শেষ করা পর্যন্ত): 

এন আই ডি কার্ডে আমার যে জন্ম তারিখ লিখা আছে (০১/০৬/১৯৭৭ ইং) তা আসলে সত্য নয়। কথাটি বলেছিলেন আমার বড় ভাই। তার মতে এন আই ডি কার্ডে আমার বয়স কমপক্ষে ১ বছর কমানো হয়েছে। চাকুরী পাওয়ার সুযোগ যাতে এক বছর বেশি থাকে, তাই স্কুল থেকে হয়তো এরুপ করা হয়েছে বলে আমার ধারনা। কারণ তখনো বাংলাদেশে শিশু জন্মসনদ এন্ট্রি বা এন আই ডি কার্ডের কোন নিয়ম ছিলো না। জন্ম তারিখের এন্ট্রি, ছাত্ররা যখন এস এস সি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করতো, সর্বপ্রথম তখনই একজন ছাত্র তার জন্ম তারিখটি তখন প্রদান করতে হতো। এস এস সি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের আগে বাংলাদেশের কোন পর্যায়ে জন্ম তারিখের প্রয়োজন পড়তো না তখন। আর যারা লেখাপড়া করতো না, তাদের কোথাও জন্ম তারিখ এন্ট্রি করার নিয়ম ছিলো না। 

বাংলাদেশে আনুমানিক ১৯৯৫ ইং সনে সর্ব প্রথম সরকার কর্তৃক এ দেশের নাগরিকদেরকে জন্মসনদ প্রদানের প্রক্রিয়া আরম্ভ করা হয়েছিলো। আর আমি এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছিলাম ১৯৯৩ ইং সনে।

এখনো স্পষ্ট মনে পড়ছে (৩০/১২/২০২৪), আমার বাবা, আমার মেঝ ভাই সহ আমাকে আমার প্রায় ৫ বছর কি ৬ বছরের সময় ১৯৮৩ সনের দিকে  গোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন।

আমার এখনো খুব সুন্দর করে মনে আছে, যখন ভর্তি হওয়ার জন্য স্কুলে যাচ্ছিলাম, তখন আমার মেঝ ভাইকে কৌতুহল ও ভয় মিশ্রিত ভাবে বলছিলাম, ভাইয়া! স্কুলে আমাকে ওরা কী করবে!? সাথে অবশ্য আরো কে একজন যেন ছিলো! তখন তারা আমাকে নিয়ে একটু মজা করলো!

আজ খুব মন চায়, আমার ভালো ভালো স্মৃতি সমূহ যদি ভিড়িও আকারে বেহেশতে গিয়ে দেখতে পারতাম!? 

ইনশা'আল্লাহ রবের অশেষ রহমতে হয়তো পারবোও!

ছোটবেলাতে ফিরে যাওয়াতো আর সম্ভব না তাই!

এরপর ১৯৮৯ ইং এর দিকে সফল ভাবে ৫ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা স্তর শেষ করি, মানে ৫ম শ্রেণী পাশ করি।

অবশ্য ৫ম শ্রেণীতে থাকা কালীন, আমার বাবার সাথে এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে সঠিক বোঝাপড়ার অভাবে আমাকে উনি ১ বছর পড়াননি, মানে স্কুলে যেতে দেননি।

আমার কৈশোরঃ

(১৩-১৭ বছর, ১৯৮৮-১৯৯২ ইং, প্রাথমিক শিক্ষা স্তর সমাপনীর পর থেকে এস এস সি, মানে মধ্যমিক সমাপনী পর্যন্ত): 

৫ম শ্রেণী পাশ করার পর যথারীতী ভর্তি হই নিজ গ্রামস্থ গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে, যা গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই অবস্থিত।

এখান থেকে বিজ্ঞান গ্রুপে ১৯৯৩ ইং সনের পরীক্ষায় ২য় বিভাগে এস এস সি পাশ করি। যে পরীক্ষাটি বছরের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এ পরীক্ষায় অল্প কয়েক নাম্বারের জন্য আমি ১ম বিভাগ পাইনি।

পাইতাম, কিন্তু টাকার অভাবে সঠিক সময়ে কোন গাইড বই বা নোট বই কিনতে পারিনি! প্রাইমারি বা হাইস্কুলের কোন ক্লাসেই কোন প্রাইভেট পড়তে বা কোন কোসিং ক্লাস করতে পারিনি। বাবার কাছে এতো টাকা ছিলো না যে, আমাকে অন্তত একমাস প্রাইভেট পড়াবে! আমার কোন গৃহ শিক্ষক ছিলো না। আবার নিজেও বেশি চালাক হয়ে যাওয়াতে পাঠ্যবই বাদ দিয়ে গান শোনা, টিভি দেখা, উপন্যাস পড়া ইত্যাদিতে সময় ব্যয় করেছি বেশি। 

মনে পড়ে, সেই শিশু কালেই আমার বড় ভায়ের বউ এর দিকের এক আত্মীয়কে বলেছিলাম, আমাকে মাদ্রাসায় পড়ালে ভালো হতো!

খুব মনেপড়ে ছোটবেলায় বাবা আমাকে পবিত্র কুরআন শরীফ হিফজ করানোর কথা বলেছিলো।

 কিন্তু কেন যে বাবা পড়ায়নি, তা আমি জানি না! 

হায় আফসোচ! যদি তিনি আমাকে হেফজ মাদরাসায় পড়াতেন; আর যদি আমি হাফেজ হতাম, আর আলেম হতাম, তাহলে তা আমার জন্য হয়তো কতইনা ভালো হতো!

অথচ তার বিপরীতে অষ্টম শ্রেণী পাশ করার পর বাবা আমাকে আর লেখা-পড়াই করাতে চাননি। 

তিনি চেয়েছিলেন, আমাকে টেইলারিং কাজ শিখিয়ে বিদেশ পাঠিয়ে দিতে। কিন্তু আমি এতে রাজি হইনি। বরং এতে বাবাকে দোষারোপ করেছিলাম।

অর্থনৈতিক টানাপোড়নে পড়ে, অথবা অর্থ এবং শিক্ষা ও আমার ডানপিঠে আচরণ এ তিনের সাংঘর্ষিক তিক্ত পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিফলের অভিজ্ঞতা থেকে হয়তো তিনি এ রকমটি চেয়েছিলেন।

এ সময়ে, অর্থাৎ ৮ম শ্রেণীতে থাকা কালীন একবার লেখা-পড়া ছেড়ে দিয়ে, বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম পালিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে উপায় বুদ্ধি খুঁজে না পেয়ে, আবার নিজে নিজেই ফিরে আসি।

আমার যৌবনকালঃ

(১৮ বছরের পর থেকে বা ১৯৯৩ ইং থেকে বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারি এ ভর্তি হওয়ার পর থেকে চলমান সময় এবং ইনশা'আল্লাহ যা আমার পৌঢ় হওয়ার আগ পর্যন্ত চলবে)

মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর, মানে এস এস সি পাশের পর ১৯৯৩ ইং সনে ভর্তি হই ফেনী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে। এখানে বাংলাদেশ কারিগরী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ইলেকট্রিক্যাল টেকনলোজিতে ৩ বছর মেয়াদী (বর্তমানে ৪ বছর) ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স কমপ্লিট করি। এবং ১৯৯৭ ইং সনে বাংলাদেশ টেকনিক্যাল টিসার্চ ট্রেনিং কলেজ, তেজগাঁও ঢাকা- এ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ৬ষ্ঠ পর্ব সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে (যেহেতু রাজনৈতিক সংঘর্ষের কারণে তখন ফেনী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বন্ধ ছিলো) ২য় বিভাগে পাশ করি।

এ সময়ে আমি পাঠ্যবই অধ্যয়নের চাইতে উপন্যাস ও ধর্মীয় বই পড়া; এবং টিভি ড্রামা ও বাংলা সিনেমা দেখায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। একটি উপন্যাস লিখেছিলামও; যার নাম দিয়েছিলাম হৃদয়; কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারিনি।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ৩য় বর্ষ থেকে আমার এ ডানপিঠে কার্যক্রম গুলো, যেমন সিনেমা দেখা, রেডিও শোনো, টেপ রেকর্ডারে বিভিন্ন গান বাজানো ইত্যাদি বন্ধ করতে নিজ মনের সাথে নিজেই যুদ্ধ শুরু করি। এবং এক সময়, মানে ডিপ্লোমা পাশের ১/২ বছর পর, অর্থাৎ ১৯৯৮ কি ১৯৯৯ থেকে, এতে সফলও হই। মানে এসব গান শোনা বা সিনেমা দেখা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিই। অবশ্য মনে পড়ে নামাজ আমি সেই ৮ম শ্রেণি থেকেই নিয়মিত পড়তাম এবং যতদূর মনে পড়ে রোজায় নিয়মিত হই ১০ম বা একাদশ শ্রেণি থেকে।

অন্যদিকে মনের দিক থেকে আমি সব সময়ই ছিলাম একেবারে উদার ও সরল প্রকৃতির। কখনোই কোন নারীর পাল্লায় পড়ে নিজের চরিত্র বিনষ্ট হয়নি আমার। বরং আলহামদুলিল্লাহ! অনেকগুলো মেয়ের এবং তাদের গার্ডিয়ানদের আবেদন আমি প্রত্যাখান করতে সমর্থ হয়েছিলাম। যা সচরাচর অনেকগুলো পূরুষের দ্বারা হয়তো সম্ভব হতো না। তবে এখন মনে হয়, এতো ভদ্রতা দেখিয়ে মনে হয়, আমি খুব একটা লাভ করতে পারিনি। কারণ, এখন আমি সৌদি আরবের মক্কায় বা মদীনায় যেতে যে কোন ওয়ে গ্রহণ করতে আমি রাজী। অথচ তখন যদি আমার বুঝ ব্যবস্থা এখনকার মতো হতো; তাহলে তখন মক্কা বা মদীনায় যেতে হয়তো আমি পারতাম! এবং হয়তো বর্তমানে আমি হতাম মক্কা বা মদীনার বাসিন্দা। যা আজ আমি পরী ব্যতীত, পাগল হলেও হয়তো পারবো না। অথচ আজ আমি যদি পাগল হয়েও যদি যেতে পারতাম; তাহলেও চলে যেতাম। আর তাই আমার জ্বীন বা পরীকে ওপেন করা প্রয়োজন!

যাক সর্বশেষ আমি নারায়নগঞ্জ যখন হাইস্কুলে শিক্ষকতা করি ও লজিং থাকি; সেখানে যে ছাত্রীটি ছিলো; তার প্রেক্ষিতে আমার সাথে থাকা এ পরীর যোগসূত্রের সাথে; আমার বিরুদ্ধে তাদের কোন কূফরী কালাম বা ব্ল্যাক ম্যাজিক ছিলো কিনা আমি জানি না! তবে আমাকে আপন করতে আমার সেই ছাত্রী বা তার পরিবার খুব করে চেয়েছিলো!

 অন্যদিকে আমার শরীরে থাকা এ পরী বা জ্বীন; ইহা আমার কোপালের লিখন; মানে জন্মগত কিনা, তাও জানি না!

তবে আমাকে পেতে যে সব নারী ইচ্ছা পোষণ করেছিলো বা চেষ্টা করেছিলো; আজ আমি তাদের সবাইকে ভালোবাসি। এবং তাদের জন্য আমার যথেষ্ট দয়া হয়। মহান রবের নিকট দোয়া করি তাদের সবাই দুনিয়া ও আখিরাতে ভালো থাকুক!

 এ দিকে ডিপ্লোমা পাশের পর কিছু কাল সরকারী চাকরি খুঁজি এবং এরই মধ্যে ভর্তি হই, সম্ভবত ৩ মাস মেয়াদি ছিলো, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরী সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক), তেজগাঁও, ঢাকা- এ প্রতিষ্ঠানে শিল্প কারখানা রিলেটেড ইলেকট্রিক্যাল ট্রেড কোর্স অধ্যয়নের জন্য।

কোর্সটি কমপ্লিট করার আগেই কে যেন আমাকে নিয়ে গেলো কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, বন্দর, নারায়নগঞ্জ-এ উচ্চ বিদ্যালয়ের জেনারেল ইলেকট্রিশিয়ান ট্রেডে, ট্রেড ইন্সট্রাক্টর পদে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে।

পরীক্ষায় আমি প্রায় ৪০/৫০ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ১ম স্থান অধিকার করলাম এবং ৮ ফেব্রুয়ারী ২০০০, এ তারিখে উক্ত পদে কারিগরী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। আমার ইনডেক্স নাম্বার ছিলো ৮০২২১৮।

আমার যোগ্যতা, দক্ষতা, উদারতা, সরলতা, বড়দেরকে সম্মান, ধার্মীকতা ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্নেহ-ভালবাসার মধ্য দিয়ে যথেষ্ট সুনামের সহিত শিক্ষকতা করে যাচ্ছিলাম। ছাত্র ও এলাকাবাসী আমার উপর যথেষ্ট সন্তুষ্ট ছিলো। আমার উপর তারা এতোই খুশি ছিলো যে, যা কোনদিন ভাষায় প্রকাশ করা আমার দ্বারা সম্ভব হবে না হয়তো। এতে শিক্ষকেরাও আমাকে সম্মান করতে ও আমাকে ভালোবাসতে বাধ্য হতে হচ্ছিলো।

কাছেই একটা লজিংয়ে উঠেছিলাম। কারণ প্রাথমিক ভাবে স্কুল থেকে আমি তেমন কোন বেতন পেতাম না। স্কুল থেকে সামান্য যা পেতাম তা দিয়ে আমার ঘর ভাড়া ও খাওয়া-দাওয়া সম্ভব হয়ে উঠতো না। তাই বাধ্য হয়েই লজিংয়ে থাকতে লাগলাম।

ছাত্র-ছাত্রীরা দলে দলে আসতে লাগলো আমার কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য। কিন্তু গৃহকর্তা এতে রাজী না থাকায় প্রাইভেট পড়ানো অব্যাহত করতে পারলাম না।

সরকারী নিবন্ধন না হওয়ায় ঘর ভাড়া করার সাহসও পাচ্ছিলাম না। তারপরও ঘরভাড়া নেয়ার জন্য অনেক খুঁজেছি। কিন্তু বেচেলর হিসেবে কোন ঘরভাড়া দিতে ঐ এলাকাবাসী রাজী ছিলো না।

লজিং বাড়িতে আমাকে থাকতে দেয়া ছোট্ট খুপড়ি ঘরটি, যা লজিং কর্তাদের ঘরের সামনেই তাদের বাড়ির সম্মুখে, তাদের মেইন ঘর থেকে আলাদা করে নির্মিত ছিলো।

এদিকে শিক্ষক হিসেবে সরকারি নিবন্ধন পেতে ৬ মাসেরও কিছু বেশি সময় লাগলো বলে মনে হয়।

এরপর এ বছরই, মানে এ ২০০০ সনের সেপ্টেম্বরের দিকেই আমার এমন এক জ্বর হলো, যা আমি হয়তো আমৃত্যু মনে রাখতে পারবো।

স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা আমাকে দেখার জন্য অনেক ফল-ফ্রুট নিয়ে আমার সেই ছোট্ট রুমটিতে হাজির হয়ে ছিলো, যা আজো যেন আমার চোখের উপর ভাসতেছে।

মূলত এরপর থেকেই আমার জীবনের মোড় পরিবর্তন হতে শুরু করলো।

নিকটে ছিলো একটি নূরানী মাদরাসা। অল্পদিনের মধ্যেই ঐ মাদরাসার হুজুরদের সাথে আমার ভালো একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠলো। বিশেষ করে মাওলানা আবদুল আজীজ (দা.বা.)। উনার কাছে শুরু করলাম পবিত্র কুরআন শরীফ কিভাবে শুদ্ধ করে পড়া যায়, সে শিক্ষা। উনিও আগ্রহ ভরে পড়ালেন। প্রতিদিন পড়তাম। প্রায় ৩/৪ মাস পড়েছিলাম। জানি না, উনি আজ কোথায় আছেন! কেমন আছেন! শুধু আমার রবের নিকট উনার জন্য এ প্রার্থনা করছি যে, "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ইয়া আল্লাহু তা'য়ালা আমার এ শিক্ষকের জন্য তুমি সুস্থতা ও ঈমানের সহিত দুনিয়াতেও শান্তি ও দীর্ঘ নেক হায়াত রাখিও এবং তাঁর ইন্তেকালের পরে তাঁকে জান্নাতের উচ্চ আসন দান করিও। এবং জান্নাতে আমাকে তাঁর সাথী করিও। আর আমাকে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) এঁর উসিলায় হলেও  তোমার একজন ওলির মর্যাদা, মানে তোমার একজন প্রকৃত বন্ধু হওয়ার তাওফিক দান করো।

আমাকে তোমার রহমতে ও বিশেষ ব্যবস্থায় সৌদি আরবের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে মক্কার মসজিদ, মসজিদে হারাম শরীফে নিয়ে যাবে। তোমার নিকট এ ফরিয়াদ আমার। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

এদিকে হাইস্কুলে শিক্ষকতা করা কালীন, এ স্কুলের স্যারদের অনেকে আমাকে আর ভালো চোখে দেখছিলো না। দু'এক দিন দু'এক জনে বলেই ফেলে ছিলো, নূরানী হুজুরদের সাথে কেন এতো সখ্যতা আমার? তারা সামাজিক ভাবে কি আমাদের সমান!?

তাদের কথা হলো, আমরা হাইস্কুল স্যার! আর এঁরা মাত্র নূরানী হুজুর!?

প্রত্যেকের একটা শ্রেণী ভেদ আছে! সোসাইটি আছে!

আমি নূরানী হুজুরদের সাথে মিশে, হাইস্কুল টিচারদের মান-ইজ্জত খর্ব করছি কিনা, এ নিয়ে আমার টিচার মহাশয়দের মধ্যে ছিলো অনেকটা ভয়! তাই তাদের অনেকে আমাকে এডিয়ে চলতো! আমি অনেকটা বুঝতে পারতাম না, কেন স্যারেরা আমাকে এভাবে এডিয়ে চলছে এখন। যেই স্যারেরা আমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলো, সেই স্যারেরা আমার সাথে চলাফেরা কমিয়ে দিয়েছে কেন!?

লজিং বাড়িতে ছাত্র-ছাত্রি হিসেবে ছিলো অষ্টম শ্রেণীর একটা মেয়ে, ৪র্থ শ্রেণীর তার একটা ছোট বোন এবং ক্লাস ওয়ানের একটা ছোট ভাই।

৮ম শ্রেণীর এ মেয়েটার কিছু কথা আমার দিলে যেন গেঁথে আছে আজো; হয়তো অনন্তকাল থাকবে। একদিন ও বলে, "স্যার আপনার সাথে কি আমার জোড়া!? আপনার সাথে আমার জোড়া হলেতো আমার কোপাল আসমানে লাগতো!"

আরেকদিন ও বলে, "আপনাদের বাড়ি নিবেন আমায়!? আমাকে এ নরকপুরী থেকে উদ্ধার করেন"

হয়তো আমাকে আপন করতে ওর মা-বাবা, দাদা-দাদু উস্কে দিয়েছিলো তাকে আমার বিরুদ্ধে। আরেকদিন সে বলে কি, "আমি যদি কোন কিছু চেয়ে না পাই, তাহলে আমি তাকে জনমের মতো শিক্ষা দিই, আর পঙ্গু করে ছাড়ি!"

আমি এ সব ব্ল্যাক মেজিক তখন বুঝতামও না; বিজ্ঞান মনষ্কা ছিলাম ও এ ধরনের কিছুকে পাত্তা দিতাম না।

তবে ঐ স্কুল ছেড়ে দিয়ে বাড়ি আসারও প্রায় ৩ বছর যাবৎ কেউ যদি তার চোখের দিকে আঙুল নিতো, তখন আমি যেন কেমন অস্বাভাবিক ব্যবহার করতাম, মানসিক রোগীর মতো চরম যন্ত্রণায় ভূগতাম। 

সে চোখে আঙুল দিয়ে প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে আমায় এমন ভয় পাইয়ে দিয়ে ছিলো যে, এ জন্যে আমার এ অবস্থা হয়েছিলো।

আসলে প্রেম নিবেদন করা, এটা কোন অপরাধ নয়। তবে প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে, প্রেমিককে পাওয়ার জন্য বা প্রেমিককে না পেয়ে, প্রতিশোধ নিতে তার উপর ব্ল্যাক ম্যাজিক করা, এগুলো হচ্ছে পাপ।

আমি জানিনা, আমার উপর কোন ব্ল্যাক ম্যাজিক করেছিলো কিনা কেউ। হয়তো করতেও পারে!

কারণ এরই কিছু দিনের মধ্যে আমি দুনিয়া বিমুখ হতে শুরু করি! আমার রব আল্লাহু তা'য়ালার প্রেম আমাকে এমন ভাবে আঁকড়ে ধরে, আমি যেন আমার রবের জন্য দিওয়ানাই হয়ে যেতে থাকলাম।

দিন যত যেতে থাকলো, তত আমি অনুভব করতে থাকলাম, আমার সাথে আমার রবের কোন এক দূত রয়েছে।

একদিন চট্টগ্রামে অবস্থিত, হাটহাজারী মাদরাসায় চিঠি পাঠালাম, চিঠিতে লিখলাম, ছেলে-মেয়ে একসাথে পড়াই, এতে ইসলামের পর্দার বিধান পালন করা সম্ভব হয় না। তাহলে আমার এ ইনকাম, এ চাকুরী কি হালাল হবে?

উনারা উত্তর দিলেন, না এটি হারাম চাকুরী। আপনি হালাল চাকুরীর জন্য চেষ্টা করুন।

এরপর এতো বেশি নামাজ পড়তে লাগলাম এবং এতো বেশি কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ্ তাহলিল করতে লাগলাম, দোয়া দরুদ পড়তে লাগলাম, যা স্বাভাবিক ছিলো না।

এরপর দিন যত যেতে থাকে, আমার স্বাভাবিক জীবন-যাপন ব্যাহত হতে থাকে এবং এক সময় আমি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে আসতে বাধ্য হই। 

বাড়িতে তখন আমার বাবার ইনকাম ছিলো না। ভায়ের ইনকামের উপর চলছিলো বাবার সংসার। ফলে আমি, বাবা এবং ভায়ের একটা বোঝা হয়ে গেলাম।

বাবা, ভাই, ভাবী এবং বাড়িতে যারা রয়েছে, এঁরা সবাই দেখতে পেলো, আমার মাঝে রবের কোন এক মহাশক্তির উদ্ভব হয়েছে। প্রথম প্রথম না বুঝলেও পরবর্তীতে আমি একে বা এদেরকে জ্বীন বলে সাব্যস্ত বা অনুভব করলাম। আমার কাছে মনে হলো, আমাকে ১/২ জন পরী গ্রাস করে আছে অথবা একদল পরী অথবা পুরো একটি জ্বীন সম্প্রদায় আমাকে আসর করে আছে। পরবর্তীতে মাঝে-মধ্যে, এরা নিজকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর সাহাবী বলেও আমাকে বুঝিয়েছে। জানি না আমি ভূল বুঝেছি কিনা! বা আমাকে নিয়ে তারা কোন কৌতুক করেছে কিনা! 

এ অবস্থায় আমার আত্মীয়-স্বজনের প্রায় সবাই এদের বিষয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু বিষয়টা এখানেও নয়। আসল কথা হচ্ছে আমি তাদের কাউকে মানছিলাম না, বা মানতে পারছিলাম না তখন। তাদের কাউকে যে, আমার নেতা মেনে এবং তার অধীনে থেকে আমল-ইবাদত করে  আমি স্বাভাবিক হবো, এটা আমি কেন যেন মানি নাই। কারণ হঠাৎ করে এ অশরীরী মহা শক্তিধর বিষয়টি আমার উপর ভর করায় আমি একটু অস্বাভাবিক ছিলাম। 

এখন যেমন আমি কোন একটা রাণীর ছবির দিকে তাকালে আমার স্ত্রী আমার কাছ থেকে উঠে চলে যেতে চায়। (নভেম্বর ২০২৪)। 

এ রকম তাদেরও অনেকটা স্বার্থ চিন্তা বা আমি নিজকে নিজে রবের অলি খোঁজা অথবা হঠাৎ বিষয়টার উদ্ভব হওয়াতে হয়তো আমি এ রকম করছিলাম।

 ভাই বলেন কি ভাবী বলেন, সকলের চোখে-মুখেই দেখতে পেয়েছিলাম, শুধুই তাদের স্বার্থপরতা।

তাছাড়া ইনশা'আল্লাহ আমি যদি আল্লাহর বন্ধু হই। তাহলে কৌশলগত ভাবে অথবা অটোমেটিক্যালি ভাবে আমার শরীরে এদের প্রকাশ্যতার কারণে হয়তোবা এসব ঘটছিলো কিনা তা আমি জানিনা!

আর আমি যদি সত্যিই আল্লাহু তা'য়ালার বন্ধু হই; তাহলে এদের সাথে বাড়িতে আমার অবস্থান হবে কেন!? 

আমার অবস্থান হবে মসজিদ কিংবা মাদরাসা কেন্দ্রিক। বা আল্লাহু তা'য়ালার কোন এক অলি কেন্দ্রিক।

আমার বংশে ঐভাবে আমি কোন আল্লাহর অলিকে আমি দেখতে পাইনি।

 আর এ অবস্থায়, তাদের কাউকে মান্য করে জীবন চলার মানে হবে হয়তো, শুধু নিজস্ব বংশীয় পূজা ছাড়া আর কিছু না!

 তাছাড়া আমিতো শুধু তাদের জন্য দুনিয়াতে আসিনি!

আর এ কারণে এবং এভাবে যখন তাদের কাউকে আমি মানতে পারছিলাম না; তখন তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বাজে ব্যবহার সহ কৌশলগত অস্ত্র ধারণ করলো। 

আমাকে খারাপ জেনে হোক, কিংবা ভালো জেনে হোক, আমাকে তাড়ানোর বা হত্যা করার জন্য তারা সবাই মিলে আমার বিরুদ্ধে সব ধরনের শক্তি ও কৌশল প্রয়োগ করতে থাকলো।

এক এক সময় একেবারে হাঁফিয়ে উঠতাম। 

আমি একা, আর তারা বাড়ির সবাই। তাদের মানসিক অত্যাচারে দুইবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমি চট্টগ্রাম চলে গিয়েছিলাম। 

জানিনা, আমার ভবিষ্যত সম্পর্কে সবাই একটা আইডিয়া করে (একটা শয়তান জ্বীন থাকে তার সাথে, এখন কী হয়, কে জানে! এ রকম) এবং আমার সাথে জ্বীন জাতিদের ২/১ জন অথবা তাদের একটা সম্প্রদায় থাকার কারণে, ও এ অবস্থায় আমার শারীরীক, মানসিক অবস্থা ও ক্যাপাসিটি কী হতে পারে বা থাকতে পারে, তার সঠিক জ্ঞান কারো জানা নয় বিধায় এবং শুধু অনুমান-ধারনার বশবর্তী হয়ে এ রকম করতো কিনা জানিনা! তবে মানুষের এ রকম অস্বাভাবিক এবং যন্ত্রণাময় ব্যবহারে আমি খুবই কষ্ট পেতাম! এবং যে কষ্টের কোন সীমা-পরিসীমা ছিলো না!

এরপরও আত্মীয়-স্বজনকে এতোই মান্য করতাম যে, আমি কখনো এদের বিরুদ্ধচারণ করতে পারছিলাম না! এবং বিরুদ্ধচারণ করা ও স্বার্থকেন্দ্রীক কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করা; তখন এসব আমি একেবারেই বুঝতাম না। অথচ এসব তারা আমার উপর নিষ্ঠুর, শত্রুতা ও হিংসাত্মক ভাবে প্রয়োগ করতে থাকলো।

আর তারাও আমার এ মান্যতার বা প্রতিবাদ না করার সুযোগটি নিয়ে ছোট ভাতিজা থেকে শুরু করে, গ্রামের রিক্সা ওয়ালা ও চায়ের দোকানের মেচিয়ার সহ আমাকে বিভিন্ন ভাবে অপমান করে আমাকে দাবিয়ে রাখার বা আমার জ্ঞান, মন, শক্তি ও সম্ভাবনাকে হত্যা করার বিভিন্ন অপকৌশল করে যাচ্ছিলো।

সে কী মানসিক যন্ত্রণা! এ যন্ত্রণার ওজন কত হবে তা আমি বুঝাতে পারবো না। যে দিকেই যাই, কেউ যেন আমায় এতোটুকু মান-ইজ্জত দিতে রাজী না! স্ত্রী, আপন, পর সবার কাছেই যেন লাঞ্চিত হচ্ছিলাম! পৃথিবীতে আমি যেন একেবারেই একা! সব চাইতে বেশি অপমাণিত হচ্ছিলাম অল্প বয়সের ছেলেপিলে, রিকসা ওয়ালা, চায়ের দোকানের মেচিয়ার এবং গ্রামের লোয়ার ও বোকা শ্রেণীর মানুষদের কাছে এবং তাদের তাচ্ছিল্যময় ব্যবহারে! এদেরকে কিছু বলতেও পারতাম না। কারণ যদিও তারা আমার মূল্যায়ন বুঝতো না বা সমাজের এলিট শ্রেণীর মানুষগুলো তাদেরকে ভূল বোঝাতো; আর তাই তাচ্ছিল্যমূলক ব্যবহার করতে এরা ছিলো যথেষ্ট পটু। অপরদিকে আমিও আমার বয়স, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদির কারণে, স্বাভাবিক ভাবেই এদেরকে কিছু বলার, সে মানসিকতা আমার ছিলো না।

এইতো প্রতিবাদ করা শরু করেছি মাত্র ২/৩ বছর হলো। আর প্রতিবাদ করার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিলাম, ফেসবুক পোস্টে কন্টেন্ট লিখার মাধ্যমে। আস্তে আস্তে মুখেও। আল্লাহু তা'য়ালা মাফ করুক মাঝে-মধ্যে এদেরকে আমি গালি-গালাছ করতেও বাধ্য হয়েছিলাম। কিন্তু আমার নিজ বাড়ির একান্তই নিকটজন ব্যতিত কাউকেই কখনো কোন ধরনের গালি-গালাছ আমি করিনি। আর নিজেদেরকে মাঝে-মধ্যে মন্দ-সন্দ বলেছিলাম এ কারণে যে, এদেরকে ভদ্র ভাবে বললে, এদেরকে ভদ্র ব্যবহার করলে, এরা কিছুই শুনতো না। যেহেতু আমি অর্থনৈতিক ভাবেও একেবারেই ইয়াতিম ও জীর্ণ-শীর্ণ হয়ে গিয়েছিলাম। 

এরপর একসময় আস্তে আস্তে মানুষ আমায় বুঝতে শুরু করলো। এভাবে যখন মানুষ আমার জ্ঞান ও ঈমানের বিভিন্ন দিক ও প্রকৃত অবস্থা জানা শুরু করলো এবং নিজ পরিবার ও বংশে কিভাবে নিপীড়িত ও নির্যাতিত হচ্ছি, তা জানা ও বুঝা শুরু করলো; তখন আমার পরিবার ও বংশীয় সদস্যগণ, যারা আমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছিলো, ছোট-বড় তাদের সবাই এবার আস্তে আস্তে নমনীয় হতে বাধ্য হতে থাকলো! কারণ আমি তখন প্রতিবাদ করা শুরু করেছি এবং মানুষেরাও আমার এ জ্বীনের ভালো দিকগুলো আস্তে আস্তে বুঝা শুরু করেছিলো।

এ বিষয়ক বিভিন্ন ঘটনা সমূহ আপনারা গুগলে jinmanb.blogspot.com লিখে সার্চ দিয়ে সেখান থেকে পড়ে নিতে পারেন।

আর আমার সাথে থাকা অশরীরী এ বিষয়টি, এটা কি আমার জন্মগত না ব্ল্যাক ম্যাজিক থেকে উৎপত্তি তা আমি ঠিক এখনো বুঝতে পারছি না।

আল্লাহু তা'য়ালা মাফ করুক, এ সময়ে মাঝে মাঝে আমি আমার এ অশরীরী বিষয়টির জন্য, আমার সে লজিং হোল্ডারদেরকে দায়ী করে কথা বলেছি।

এটি হয়তো সত্য নাও হতে পারে। আমাকে নিয়ে আমার রবের হয়তো অন্য কোন উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। যার জন্য সকলের নিকট আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার সাথে রবের দূতের এ সম্পর্ক, এ জন্যে তারা হয়তো দায়ী নাও থাকতে পারেন। কারণ তাদেরকে দায়ী করার বিষয়টি ছিলো শুধুই আমার অনুমান আর ধারনা নির্ভর। এবং যা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করার কারণেই, ও এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না ফুটার কারণেই আমি হয়তো এসব বলেছিলাম।

(সাঃ) হে আল্লাহ! তুমি আমায় মাফ করো। আমি ভবিষ্যতে তাদেরকে দায়ী করে ইনশা'আল্লাহ আর কিছু বলবো না। (সাঃ)

ভায়েরা, আগে যদি বুঝতাম যে সৌদি আরবে অবস্থিত আল্লাহু তা'য়ালার ঘর কা'বার সাথে আমার এতো নাড়ির সম্পর্ক হবে, আত্মার এতো টান হবে, তাহলে যৌবন বয়সে অনেক মেয়ের অভিভাবকদের কাছ থেকেই আমি এ ধরনের অফার পেয়েছিলাম। তখন আমি অবশ্যই চলে যেতাম। 

যাক, এখন আমার একটিই উদ্দেশ্য, আমি কিভাবে আল্লাহু তা'য়ালার বন্ধু হতে পারবো! কিভাবে আল্লাহু তা'য়ালার একজন সত্যিকারের অলি হতে পারবো! আর কিভাবে সৌদি আরবের নাগরিক হয়ে মসজিদে হারাম শরীফে নিয়মিত নামাজ পড়তে পারবো! এবং এ মসজিদে এত্বেকাফ করে ঈমানের সহিত ইবাদতরত অবস্থায় কিভাবে এ ধরাধাম ত্যাগ করতে পারবো!

এখানে রবের নিকট আমার আরেকটি বিশেষ বিষয় চাওয়ার রয়েছে এবং এখন তাঁর নিকট আমি তা চাচ্ছি। তা হচ্ছে-

 সাঃ, হে আল্লাহ! আমাকে যদি তোমার বন্ধু ও মানুষের সেবক হিসেবে গ্রহণ করো; তবে মানুষ হিসেবে আমার, মানে জনাব আরিফের, মানে মানুষের এ দেহ, মন ও ব্রেনে তুমি ১০০% মানুষ ও জ্বীনের বৈশিষ্ট্য; তথা উত্তম আখলাক, শক্তি, সৌন্দর্য, সক্ষমতা, রূপ-লাবণ্য, হায়াত ইত্যাদি উভয় জাতি হিসেবে উভয় জাতির নিকট আমাকে দৃশ্যমান করবে (জ্বীনদের নিকটও) এবং মানুষ ও জ্বীন, উভয় জাতিকেই বুঝিয়ে দিবে যে, এ মানুষটির মাঝে উভয় জাতির বৈশিষ্ট্য শতভাগ বিরাজমান। অপর দিকে আমার সঙ্গে থাকা এ পরী/জ্বীন যেন মানুষের বেসে আলাদা শরীরে আমার সাথে মানুষের মাঝে এবং প্রকাশ্যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর সাহাবীদের যুগের পর থেকে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত পৃথীবীর শ্রেষ্ঠ জ্ঞানবান, রূপবতী, ধনবতী, শক্তিময়, সেবক ও সর্বদিক দিয়ে শ্রেষ্ঠতম যোগ্যতা নিয়ে আমার সাথে অবস্থান করে এবং ইসলামি শিক্ষা ও ইসলাম প্রচারের কাজে আত্মনিয়োগ করে [হযরত ঈমাম মাহাদী (আঃ) ও হযরত ঈসা (আঃ) ব্যতীত]। আমাকে জ্বীনদের সমাজে যাওয়ার এবং তাদের সাথে, তাদের বন্ধু হিসেবে, ওপেনলি ও স্বাভাবিক ভাবে মিলেমিশে চলার তাওফিক দিবে।  ইয়া আল্লাহ! পৃথিবী থেকে আমাদের ইন্তেকাল একসাথে দিবে এবং আমরা যদি উভয়েই তোমার অলি বা বন্ধু হই, তবে আমাদের সকল কাজে সমানে সমানে সাওয়াব-গুনাহ বন্টন করবে। এমনটি যাতে না হয় যে, একজনের ইন্তেকাল দিবে; কিন্তু অপরজনকে বাঁচিয়ে রাখবে। প্রয়োজনে ব্যতিক্রম এক সৃষ্টি হিসেবে আমাদেরকে হাজার হাজার বা লক্ষ লক্ষ বছর তোমার উত্তম ঈবাদতকারী ও শ্রেষ্ঠতম ভাবে মানুষের সেবক হিসেবে বাঁচিয়ে রাখবে। কিন্তু কোন পাপ কাজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তাহলে প্রয়োজন নেই। আমাদের নিজেদের সকল কাজে একে অপরকে সহযোগী, সান্তনাদানকারী, সাহসযুগানেওয়ালাকারী হিসেবে একই মন, ব্রেন ও শরীরে সার্বক্ষণিক অবস্থান করার তাওফিক দিবে। আমাদের উভয়কে একক এবং আলাদাভাবে ফলপ্রসু নেক নিয়ত করার তাওফিক দিবে ও এতে আমাদের সকল কাজে একে, অপরকে পরিপুরক হিসেবে, আমাদের সকল কাজ সমাধা করতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালানোর জন্য তাওফিক দিবে।

আমরা যেন জ্বীনদের সাথে ওপেনলি মিলেমিশে চলতে পারি। এবং মানুষের সাথেও। আমাদেরকে এ তাওফিক দিবে। জ্বীনেরা যেন বুঝতে পায় যে, ইনি হচ্ছেন একজন উত্তম আখলাকের জ্বীন এবং মানুষেরা যেন বুঝতে পায় যে, ইনি হচ্ছেন একজন উত্তম আখলাকের মানুষ। ইয়া আল্লাহু তা'য়ালা আমার এ আন্তরিক দোয়াখানা তুমি কবূল করবে। আমীন। সাঃ।

বলা বাহুল্য, ইনশা'আল্লাহ! আল্লাহু তা'য়ালার খাঁটি বান্দা হিসেবে, আল্লাহু তা'য়ালার গোলাম হিসেবে চলতে গিয়ে, মানুষকে উদার ভাবে ভালোবাসতে গিয়ে, মানুষের সেবা করতে গিয়ে, এবং সেবা করার মানসিকতা রাখতে গিয়ে, আমাকে সীমাহীন ত্যাগ ও দুঃখ-কষ্ট সইতে হচ্ছে এবং চরম ভাবে আমি পাপীও হয়ে গেছি আজ। এবং প্রায় নিঃস্ব জীবন কাটাতে হচ্ছে আমাকে।

জানি না শেষ পর্যন্ত আমার পিউরিটি আমি ধরে রাখতে পারবো কিনা এবং আমার রবকে আমি পাবো কিনা!

সবকিছু লিখতে আসলে মন চাচ্ছে না। কারণ জীবনে মানুষের জন্য চোখে পড়ার মতো কিছু যদি করতেই না পারি, মানুষ আমার সেবা পেয়ে যদি উপকৃতই না হয়, তাহলে আমার এসব পড়বে কে এবং কী লাভ হবে এসব লিখে!

তবুও একটু একটু লিখি। মানুষের জন্য সেবা মূলক কিছু করতে পারলে, তখন বিস্তারিত ভাবে লিখবো। এবং হঠাৎ করেতো তখন হয়তো এতো কিছু লিখতেও পারবো না। তাই কিছু কিছু লিখছি।

তো হাইস্কুলে চাকুরী ছেড়ে দেয়ার পর অনেক গুলো চাকুরী ধরেছি এবং অনেক গুলো চাকুরী ছেড়েছি। মান সম্মত একটি চাকুরিও পাইনি।

একসময় চাকুরী বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করলাম বন্ধন ফাউন্ডেশন নামে, সমাজ ও মানব সেবা মূলক একটি প্রতিষ্ঠান এবং এর অধীনে চালু করলাম  ইসলামী সমবায় সমিতি। প্রায় ৬/৭ বছর তা চালিয়ে ছিলামও।

পরে চেষ্টা করলাম ডিস্ট্রিবিউটেড ব্যবসা করতে এবং হলুদ, মরিছ ও মসলার উৎপাদনমূখী ব্যবসা করতে।

কিন্তু কোন কিছুতেই সফলতা পাই নি। 

চেষ্টা করেছিলাম ইউটিউবে কোরআন তিলাওয়াত শিক্ষার একটা কোর্স পরিচালনা করবো এবং ওয়েবসাইট বানিয়ে মানুষকে তথ্যসেবা প্রদান করবো।

কিন্তু আমার প্রতি আপনজনদের বেড আইডিয়া হওয়ার কারণে এবং এরই প্রভাবে সৃষ্ট দারিদ্রতার কষাঘাতে কোন কিছুই আমার হচ্ছিলো না।

সবচাইতে বেশি আঘাত ও মর্মাহত হয়েছি, আপনজনদের দ্বারা। এদের কেউ আমার একটি কাজেও সহযোগিতা ও সাপোর্ট দেয়নি। হয়তো তাদের দৃঢ়মূল ধারনা ছিলো, আমার সাথের এ জ্বীন বা পরীটি একজন দুষ্ট জ্বীন বা কাফের জ্বীন। তাই একদিকে যেমন আমি অর্থনৈতিক ভাবে ফকির হয়ে যাওয়া; অপরদিকে তাদের স্বার্থবাদী ব্যবহার এবং আবার এ দূষ্টজ্বীন কখন কী ক্ষতি করে বসে; এসব থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে হয়তো তারা এ রকমটি করতে পারে।

আমার মনে হয়, মূলত এ কারণেই আমার কোন কাজে সফলতা আসছিলো না। যেহেতু আলহামদুলিল্লাহ! আমি মুমেন ও মুসলিম ছিলাম। আর এ কথা সত্য যে, কেউ যদি সত্যিই মুমেন হয়; তাহলে সে কষ্মিক কালেও, তার রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়দের অমতে বা বাধার মুখে, কিছু করে সফলতা পাবে বলে আমি মনে করি না। আসলে তারা আমায় বুঝতে পারেনি এবং আমায় নিয়ে তাদের অহেতুক ও শুধুই তাদের ধারনা নির্ভর ভয় ছিলো। 

আমার পরিবার, আত্মীয়, বংশ ও পাড়া-প্রতিবেশী, গ্রামবাসী এবং পরিচিত জনদের সবার চোখে আমার সাথে যে বা যারা ছিলো; তারা ইবলিশ জ্বীন হিসেবেই তাদের বদ্ধমূল বিশ্বাস হয়ে গিয়েছিলো!

কিন্তু ঠিক কেন ও কী কারণে; বা আমার কোন্ কোন্ ব্যবহারে, তারা আমার বিষয়ে এতো বড় একটা ভূল আইডিয়া করলো এবং তাদের এ আইডিয়াকেই সত্য মনে করলো; ও তা প্রকাশ ও প্রচার করে আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, সমাজ ও দেশের সর্বস্তরে আমার জীবন-যাপন ও বেঁচে থাকাকে একটা হুমকি, যন্ত্রণা, অপমাণ আর বীভীষীকার মধ্যে ফেলে দিয়েছিলো, তা আমি সঠিক ভাবে বুঝতে পারিনি।

এবং কী লক্ষণ দেখেছিলো যে, যে কারণে তারা আমার সাথে থাকা এ জ্বীন জাতিকে, তাড়াতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলো! আমি প্রকাশিত হলে তাদের কী ক্ষতি হতো বলে তারা মনে করেছে বা আমাকে নিয়ে তাদের কোথায় এতো ভয় ছিলো; তা আমি পোরোপুরি আজো বুঝি না! (০৮/২০২৫)

ভাই, বুঝবো কী করে বলেন! যেদিকেই যাই; মানুষকে যাই'ই বলতে চাই, কেউ যেন আমায় সহজ ভাবে মেনে নেয় না! ভিতরগত ভাবে কেউ যেন আমায় দেখতে পায় না। আমার ভালো কোন কথায় বা কাজে কেউ যেন আমায়, সাপোর্ট দেয় না; সমর্থন করে না। কারো কাছ থেকে যেন কোন ধরনের আন্তরিকতা ও দয়া-মায়া পাইনা। মানসিকতার সে কি করুন ও বেদনাদায়ক অবস্থা! সবাই মনে করে যে, আমার সাথে শয়তান জ্বীন থাকে; তাই আমি কারো হৃদয় বা সাপোর্ট পেতে পারিনা; এ রকম একটি অবস্থা!

আর এ পর্যন্ত আমি কোন ভালো মানুষও পাইনি।

উনারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের ঔষুধ খাইয়ে, বিভিন্ন তাবিজ-তুমার আমার গলায় ও হাতে প্যাঁচিয়ে, বিভিন্ন গুণিন-বদ্যের ঝাড়-ফুক ব্যবহার করে আমার উপর এই যে, জ্বীনের আসর হওয়া, আমার জীবনের এই যে একটা স্মরণীয় ঘটনা; তা তারা ভূলিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিলো। ২০০১ থেকে উদ্ভব হওয়া আমাকে জ্বীন কর্তৃক ঘ্রাস করার বিষয়টি প্রায় ২০২১ পর্যন্ত ভূলে ছিলাম বা প্রকৃত বিষয়টি বুঝতে পারিনি। অর্থাৎ যদিও আমার শরীরে জ্বীনের কিছু প্রভাব ছিলো; তবুও আমি কিন্তু তা বুঝতে পারিনি বা পারতাম না।

সম্ভবত ২০০১ সনে মসজিদের মধ্যে এত্বেকাফে থাকা কালীন, আমারই নিজ ভাই আমাকে যাকাতের টাকা দিতে চায়; আর মসজিদের ঈমাম সাহেব আমার উপর চোখ রাঙ্গায় টাকা গুলো লওয়ার জন্য। উনি বাড়িতে পাশাপাশি ঘর বাদ দিয়ে মসজিদে টাকা দিতে যায়। আবার এত্বেকাফের সময় যতই নামাজ আর কোরআন তিলাওয়াত করি; মানুষ কোন সাধুবাদতো জানায়'ই না; উল্টো বিভিন্ন টিটকিরি করে শুধু! 

তখন মাথায় ইলেকট্রিক শখ খাওয়ার দশা! এই শুরু করলাম প্রতিবাদ। এরপর থেকে একে একে মনে পড়তে থাকলো, কেমন করে আমার নিজ বড় ভাই, আমাকে আমার বাবার পুকুর থেকে, আমার নিজ ঘর ভিটা বাঁধাই করার জন্য অল্প কিছু মাটি আনতে দেয়নি, বাধা দিয়েছে; কেমন করে আমি একটি মুদী দোকান দিয়েছিলাম, আর আমার বড় ভাইকে হাজারো অনুরোধ করার পরেও, উনি আমার কাছে যেতেন না; কেমন করে বাবা জীবীত থাকতে কেনা আমাদের ৩ ভাইয়ের নামে কেনা জমি আমার আরেক ভাই আমাকে দখল না দিলে, তখন জেঠাতো ভাই বলতেন জমি ক্রয়ের টাকা দিতে হবে, না হয় দখল দেয়া হবে না এবং কেমন করে রাতে স্ত্রীর সাথে শুতে গেলেও ভাবী সাহেবা অপমাণমূলক ব্যবহার করেছেন এবং কেন স্ত্রীর দ্বারা এভাবে তাচ্ছিল্য আর অপমানের শীকার হচ্ছিলাম। ইত্যাদি। ইত্যাদি। এভাবে আমাকে অপমানে অপমানে কোনঠাসা করে দাবিয়ে রাখার প্রচেষ্টা তারা অব্যাহত রাখলো।

আর কেনই'বা রাখবেনা বলেন? আমি এমন কতগুলো ভাব ভঙ্গিমা ও আকার ইঙ্গিত দেখাই এবং ইশারা ইঙ্গিতে যা করবো বলে বলি; যা সাধারণত কোন মানুষের দ্বারাই সম্ভব নয়। আর আমার মতো এ রকম লোয়ার পর্যায়ের মানুষের দ্বারাতো এসব কখনো সম্ভব হওয়ার প্রশ্নই উঠে না!  ফলে আমার মতো এ পর্যায়ের মানুষের দ্বারা এসবের বাস্তবায়ন কখনো সম্ভব নয় মনে করে, এবং আমাকে পাগল বিবেচনা করে ও দূষ্ট জ্বীন বিবেচনা করে হয়তো তারা এ রকম করতো! যেমন কথার কথা সমাজের মানুষকে যদি আমি বলি, ইনশা'আল্লাহ, আমি সৌদি নাগরিক হবো! মসজিদে হারাম শরীফে নিয়মিত নামাজ পড়বো ও এ মসজিদে এত্বেকাফ করবো! তখন স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ গুলো আমায় পাগল বলবেই!

আর যেহেতু এসব বিষয়ে আমার কিছু না কিছু বুঝ হয়েছে; তাই আমি মানুষকে দোষ দিবো কিভাবে!? 

কেউ একজন যদি মূল বিষয়টি বুঝতেই না পায়; জ্বীনের প্রভাবে যদি আমার শারীরিক-মানসিক অবস্থা কীরূপ তা মানুষগণ যদি বুঝতেই না পারে; অথবা তখন না বুঝে বা ভূল বুঝে আমার উপর কিছু অন্যায় করেও ফেলে; তবু তাকে কি দোষ বা শাস্তি দেওয়া যায়? যায় না! কারণ সেতো আমাকে বুঝতেই পারেনি! আমার বিষয়টাও এ রকমই!!

তাছাড়া তারা সমাজের সবাই আমার প্রতি অন্যায়, আর জুলুম করলেও, আসলেতো তারা আমাকে এবং আমার সমাজকে প্রিভেন্টিং দিতেই এ রকম করেছে!! 

সুতরাং দশজন থেকে বেশি বুঝতে গিয়ে, বেশি উদার হয়ে, বেশি আবেগ রেখে, বেশি আশা করে, আজ আমি পদে পদে অপমাণিত হচ্ছি! মার খাচ্ছি! সবইতো আসলে আমার নিয়তেরই ফল! তাই আমার বিরুদ্ধে সুবিধা ভোগিরা আমাকে বেকায়দায় ফেললেও; আমিতো আর ঐভাবে একশান নিতে পারিনা! 

আমি কাকে দোষ দিবো বলেন? যেহেতু এ রকম দৈত স্বত্ত্বার মানুষ যে তারা বা তাদের পূর্ব পুরুষগণ হয়তো সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্তও কেউ দেখতে পায়নি যে!! তাই রবের নিকট আমার ফরিয়াদ; উদারতা ও মহানুভবতা এবং ব্যক্তত্ব ও চরিত্রের দিক থেকে অতি উত্তম আবেগ বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষকে কাঁদালেও, মানে ফেইলিউর করলেও, অন্তত একজন মানুষকে সর্বোচ্চ বেহেশতের হাঁসিতে হাঁসাতে পারে! আমি যেন সে একজন লোক হতে পারি! 

এর মধ্যে ফেনীর আই সি এস টি (বেসরকারী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট), এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছি প্রায় ১০ বছরের মতো। 

মানুষের নিকট তাদের দৃষ্টিতে আমার ইবলিশ চরিত্রকে ফিরিয়ে, মুমেন জ্বীন হিসেবে পরিচিত হতে, আমাকে অনেক অনেক বেগ পেতে হয়েছে এবং সীমাহীন ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তবে এ লিখা লিখার সময়েও (১৮/০৭/২০২৫ ইং) আমি সমাজের অল্প কিছু মানুষের বিশ্বাস ছাড়া, বেশি মানুষের বিশ্বাস এখনো কুড়াতে পারিনি। তবে মানুষের কাছে ভয় ও আতঙ্কের ভাগ হয়তো কিছুটা কমেছে; কিন্তু আমাকে নিয়ে তাদের কৌতূহল কোন অংশেই কমেনি। তাচ্ছিল্য নির্ভর তামাসা চাওয়া-চাওয়ি হয়তো কিছুটা কমেছে। সন্দেহ আর অবিশ্বাসের দোলা চলে, চলছে এখনো আমার জীবন।

এভাবে আমাকে কেন আমার আপনজনেরা এবং সমাজের মানুষেরা ভূল বুঝেছিলো, তা আমি একটু বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করছি; আর বুঝিয়ে বললেও আপনারা আমার মন ও ব্রেনের এ সব প্ল্যান ও অবস্থা বাস্তবায়িত হওয়া ছাড়া পুরোপুরি হয়তোবা কেউই আমাকে বুঝবেন না; যেহেতু ইনশা'আল্লাহু তা'য়ালা আমার চিন্তাধারা সমাজের বাঁকি কমপক্ষে হয়তোবা বিলিয়ন মানুষের চিন্তাধারারও বাইরে! তবুও আপনারা এ মূহুর্তে সব কিছু না বুঝলেও, যদি শুধু আমার প্রতি দয়া-মায়া, মুহাব্বত আর বিশ্বাস থাকে তাহলে কিছুটা হলেও বুঝবেন।

শুনুন, আমি চেয়েছি আমার এ জ্বীন জাতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় চার বিয়ে করতে; এবং আমি চেয়েছি দাস প্রথাকে এক্টিভ করে নিজেই কিছু দাসী রেখে আল কোরআনের শান ও মান অক্ষুন্ন রাখতে। আর এভাবে কমপক্ষে ১০০ সন্তানের বাবা হয়ে ও অন্যান্য আরো বিগ বিগ এক্টিভিটিজ দিয়ে; যেমন এমন একটি ইন্টারনেট রাউটার আকাশে স্থাপনের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের মানুষকে একেবারে নামমাত্র মূল্যে ও এতে বিদ্যুত সংযোগ ছাড়াই মানুষকে অত্যন্ত দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে; এবং বিকল্প বিদ্যুৎ ও এপ্ল্যায়েন্স আবিষ্কার, ইত্যাদি নব নব আবিষ্কারের মাধ্যমে নোবেল ঘরে তুলতে।

আবার দেখুন, এখন আপনি আপনার বউকে শুধু বলেন, আর এক বিয়ে করবেন! আর প্রত্যক্ষ করেন না! ঘরে শুইতে পারেন কিনা! এবং যে সন্তানের জন্য প্রাণ ক্ষয় করছেন, তাদেরকে আপন করে পান কিনা! তাহলে আমার ক্ষেত্রে এসব ঘটবে না কেন বলেন? হঠাৎ করেতো উনারাও আমার সবকিছু বুঝে উঠার কথা নয়; তাই না!?

তাছাড়া আপনিতো বুঝিয়ে বলতে পারতেছেন, আর আমি অনেক সময়, অনেক কিছু নিজেও বুঝতেছিনা, ফলে বুঝিয়েও বলতে পারছি না। যেহেতু এ পর্যন্ত আমি বুঝতে পারছি যে, আল্লাহর কোন একটি নেয়ামত বা বিষয় যতক্ষণ আমার ও আমার সম্প্রদায়ের মাথায় ঠিক মতো না ধরবে ও আমাদের সবাই এতে রাজী-খুশি না থাকবো, ততক্ষণ এরা আমাদের কাউকেই হয়তো বিষয়টা বুঝতে দেবে না! ফলে মানুষ আমাকে দুঃচরিত্র হিসেবেই হয়তো বুঝতে পারবে। এবং এভাবে বুঝে নিয়েছেও!

আবার বুঝতে চেষ্টা করুন, যেহেতু আমার নিয়ত, উদ্দেশ্য এবং অকল্পনীয় সাহস আর অনেক অনেক বড় বড় কর্ম করার এবং এ উদ্দেশ্যের প্রতীক হিসেবে যখন আমার আপনজনদেরকে আমি বড় হিসেবে কিছু দেখাতে চাইলাম বা এ ধরনের কোন ইশারা-ইঙ্গিত দিলাম; ও যেহেতু আমি সত্যের একনিষ্ঠ সাধক, তাই হয়তো কাউকে মানলাম না; আর আমার এ মানসিক অবস্থাটিকে হয়তো আমার আপনজন ও সমাজের মানুষেরা নেগেটিভ হিসেবে নিয়ে, আমাকে ইবলিশ মনে করলো! এবং বিষয়টি হয়তোবা কাউকে বুঝিয়ে বলতেও পারলাম না! আচ্ছা বড় লোকদের শান, মান, অর্থ ও আসন এবং সম্মান কি অন্যদের চাইতে বড় হওয়া স্বাভাবিক নয়? আর সে জায়গায় যদি কোন বড় লোকের মতো মানুষকে একেবারেই অর্থহীন করে, একেবারেই লোয়ার রেংকের মানুষদের সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়; তাহলে তার অবস্থা কী দাঁড়ায়, তার পরিচয় আর কী থাকে, আপনারা বলেন? আর এভাবে জীবনের বিভিন্ন কাজ ও মানসিকতায় আমি মানুষের নিকট ইবলিশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলাম।

তবে আমি আজ স্পষ্ট বুঝতে পারলাম বা পারছি যে, যারা আমাকে আমার বড় মানসিকতার কারণে ইবলিশ মনে করেছিলো এবং  আমাকে পদে পদে আঁটকাতে চেয়ে বিভিন্ন ধরনের নিষ্পেষণ চালিয়ে আমাকে ছোট রাখতে চেয়েছিলো; আচ্ছা বলুনতো জীবনে কে সেকেন্ড থাকতে চায়!? সবাইতো ফাস্ট হতে চায়, তাই না? তাহলে আমি বড় থাকতে বা হতে চেয়ে কেন ইবলিশ হতে যাব!? মূলত আমার মনে হয়, আমি ছোট মানুষ হয়ে, বড় মানসিকতা, বা অনেক বড় হতে চেয়েছি, যা সাধারণত চারপাশের মানুষেরা চাইতে পারে না এবং যা স্বাভাবিক না; হ্যাঁ, হয়তো এটাই আমার দোষ ছিলো! আর এ জন্যেই হয়তো আমাকে কেউ মেনে নিতে পারেনি! 

আসলে যার পকেটে টাকা নেই, যার কোন বড় ধরনের দায়িত্ব নেই বা সম্পদ নেই; তাকে বড় কে মেনে নিবে বলেন? আর মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হিসেবেই, সে তার চারপাশের মানুষের কাছে তাদের চাইতে বড় থাকতে চায়!

আজ আমার কাছে মাঝে-মধ্যে মনে হয়, তাদের নিজেদের বড় থাকার বা বড়ত্বের মানসিকতার কারণেই তারা আমাকে বড় বা শয়তানি চরিত্র হিসেবে দেখতে পায় এবং তাদের এ শয়তানী মানসিকতার কারণেই আমাকে তারা ছোট রাখতে চেয়ে আমার উপর বিবিধ নিপীড়ন চালায়!

আলহামদুলিল্লাহ! যে বিষয়টি আজ আমার উপর নিপিড়নে নিপিড়নে আমাকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলার মতো অবস্থা করার পরে হলেও প্রমাণিত হয়েছে। কারণ আমার এতো করুণ অবস্থার পরেও, প্রায় মৃত্যু পথযাত্রি হয়েও, আল্লাহর অশেষ রহমতে এখনো আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে পড়া ছাড়িনি; সমাজের কেউ প্রমাণ করতে পারবে না যে, আমি কোথাও কারো সাথে মিথ্যা কথা বলেছি বা মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিয়েছি অথবা কারো সাথে কোনরূপ খারাপ ব্যবহার করেছি বা অবৈধ কোন ইনকাম করেছি! বা মানুষের সাথে অপ্রোয়জনে বকমবাজি করেছি!

আবার ধরুন, যেহেতু আমি পরী বিয়ে সহ ৪ বিয়ে করার নিয়ত রেখেছি, দাসী রেখে ও দাস-দাসী প্রথা পুনঃ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আল-কোরআনের আইনকে সমুন্নত রাখতে চেয়েছি, উচ্চ ব্যক্তিত্ব ও রাজা-বাদশার মতো মন রেখেছি, সরল সত্য ও উদার মানসিকতা রেখে জীবন-যাপন করছি, অথচ আমার অর্থনীতী বা কোন পদবী বলতে কিছুই নেই; তার উপর সাথে রয়েছে জ্বীন বা পরী; এমন অবস্থা বা পরিস্থতিতে মনে করুন, আমার স্ত্রী সহ চারপাশের মানুষগুলো আমায় অনেক সময়ই ভূল বুঝলো, আমায় পাপী মনে করলো বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বৈরীতা সৃষ্টি হলো; এতে হয়তো আমি সালাম দিলেও উত্তর দিলো না, এভাবে আমার সাথে বিভিন্ন বাজে ব্যবহার করলো; যে ব্যবহার গুলো অন্য মানুষদের সাথে করলে হয়তো সে আপনাদের চিরশত্রু হয়ে যাবে, কোন সম্পর্কই রাখবেনা আর; অথচ আমি!? আপনাদের এ ধরনের সব কিছু বা সহস্র বাজে বা হিংসুটে বা শত্রুতাপূর্ণ ব্যবহার বা নির্যাতন সহ্য করার পরেও; আবার আমি নিজ থেকেই আপনাদের নিকট নত হয়ে, বিনীত হয়ে মিশতে হচ্ছে; যেখানে আপনারা ভূলক্রমেও নিজের ভূল বা পাপ স্বীকার করতে রাজি না বা এ ধরনের চরিত্র আপনাদের নাই। তাহলে একটু চিন্তা করুন; এইযে আমার ধৈর্য-সহ্য আর কষ্ট এবং মানুষের প্রতি ক্ষমার মানসিকতা; আবার তাদের প্রতিই উদারতা ও তাদেরই খেদমত করার মানসিকতা; আল্লাহ্ মাফ করুক, আমার চরিত্রের এ ভাল দিকটি আপনি কোন্ বাটখারা দিয়ে মাপবেন!? এটা একটা মহান চরিত্রের মানসিকতা নয় কি!?

অথচ আমার সাথে ফ্রিকশনেবল এ মানুষদের; ইনশা'আল্লাহ তারা আমার এ চরিত্রে আমল করার মানসিকতাই হয়তো রাখে না!! হয়তো এ ধরনের চরিত্র কী ও কেন, তা বুঝেই না!!

এখন আপনাদের কেউ কেউ বলতে পারেন, তাহলে কেন আমার রব আমাকে এতো নিম্ন রেংকে রাখলেন? এ ক্ষেত্রে একটি সত্য কথা হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে যে যত বেশি উচ্চ মানুষ হবে, তাকে ততবেশি নিম্ন মানুষদেরকে জয় করতে হবে।

তবে আমি সিউর করে এখনো জানি না, আসলে আমার সাথের এ পরী বা জ্বীন সম্প্রদায়কে ওপেন করতে পারবো কিনা? এবং ওপেন করতে পারলেও, তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ-বিত্ত পেলেও আসলে আমি বিগ ধরনের কিছু করে সাকসেস হবো কিনা! আসলে সবই আল্লাহর ইচ্ছা ও কেবল তাঁরই করুণা! তবে আশার কথা হচ্ছে আমার অনেক বড় ধরনের নেক নিয়ত রয়েছে!

এদিকে আই সি এস টি-তে শিক্ষকতার পর এ পর্যন্ত ২টি কাওমি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছি। ম্যানেজার হিসেবে একটি বড় ধরনের হাসপাতাল পরিচালনা করেছি ও একটি থেরাপি সেন্টার পরিচালনা করেছি। এছাড়া আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেছি। অবশ্য কোন প্রতিষ্ঠানেই বেশি সময় ধরে কাজ করতে পারিনি। অর্থাৎ কোথাও স্থায়ী হতে পারিনি। 

আমার একটিই সমস্যা, সেটি হচ্ছে আমি দৈত স্বত্ত্বা এবং উচ্চ রেসপনসেবিলিটি নিয়ে চলতে চেয়েছি ও সত্যিকার ভাবেই আল্লাহর বন্ধুর মতো সরল-সহজ জীবন-যাপন করতে চেয়েছি এবং পিউর সত্যের একনিষ্ঠ ধারকের মতো ব্যবহার আমার কাছে দৃষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে, আমি যেন, আমার উপরস্থ কর্মকর্তা বা মালিক থেকেও দামী লোক; এই আর কি! 

আপনারা জানেন, এ চরিত্রের মানুষ গুলোর অর্থ ও পদবী স্বাভাবিক ভাবেই থাকতে হবে উঁচু পর্যায়ের; অথচ এ বিষয় গুলোতে আমার পজিশন একেবারেই নিচু পর্যায়ের। ফলে নিচু মানুষগুলো আমাকে বুঝতোও না; আর উঁচু মানুষগুলো তাদের পজিশন বা অহংকারের কারণে আমাকে তাদের সাথে স্থানও দিতো না; অধিকন্তু স্বার্থের কারণে বা পাগলামি মনে করে, আমার বিষয়ে নিম্ন আয় ও নিম্ন চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের মানুষদের নিকট টিটকিরি বা তিরষ্কার করতো। এ বিষয়টিতে অবশ্য প্রতিষ্ঠানের চাইতে সমাজেই বেশি অপমাণিত হয়েছি। ফলে ম্যাচিং পজিশন আন ব্যালেন্সিং হওয়ায় একভাবে না একভাবে সমস্যার সৃষ্টি হতো; এছাড়াও তারা বেতন এতো কম দিতো যে; চাকুরী আর আমি করতে পারতাম না। তবে আমাকে সাসপেন্ড করেছে বা আমার দোষ ধরে পাঠিয়ে দিয়েছে; এ রকম প্রতিষ্ঠান ২/১টি ছাড়া ছিলোই না। সবগুলো থেকে আমিই চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ছিলাম; আরো একটু বেশি ইনকাম বা অশান্তি পাওয়ার কারণে বা আরো সুখ বা শান্তির আশায়।

২টি কাউমি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতে গিয়ে ওখানকার মানুষ সর্ব প্রথম আমাকে ভালো হিসেবে বুঝতে পায়। অল্প কিছু দিনের মধ্যে ওখানকার মানুষদের চোখে আমি প্রায় ফেরেশতা তুল্য হয়ে অনেক সম্মান কুড়াতে থাকি। এতে কেউ আমার সাথে ফেরেশতা আছে বলে, আবার কেউ বলে আমার সাথে ভালো জ্বীন থাকে। এর একটি মাদরাসার হচ্ছে, বায়তুন নুর মাদরাসা ও এতিমখানা, উত্তর কডৈতলী, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর। আর অন্য মাদরাসাটির ঠিকানা হচ্ছে, মানিকপুর জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরাসা, বসুর হাট, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালি।

এসব দূরের মাদরাসার মানুষদের কাছে আমি ভালো মানুষ হয়ে কী করবো; এলাকাতেতো আমি আগে যেই ইবলিশ জ্বীন ওয়ালা ছিলাম, এখনো তাই রয়ে গেলাম। হয়তো ২/১ জনের মাঝে একটু একটু বুঝ ঢুকতে ছিলো!

পরের এ মাদরাসা থেকে যখন চাকুরী ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে মনস্থির করি; তখন এ মাদরাসার বড় হুজুর কিছুতেই আমাকে ছাড়বেন না; এ যেন তিনি ইস্পাত-কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আমার বেতন বৃদ্ধি করে দেয়ার ও মসজিদে থাকতে দেয়ার বিষয়ে অপার প্রদান করলেন। এমনকি তিনি আমার কমপক্ষে ৯০০০ টাকার মালামাল আমাকে আনতে দেননি। তবুও কেন ও কী কারণে চলে এসেছিলাম এবং হুজুর কেন আমার এতোগুলো টাকার মালামাল রেখে দিয়েছিলো, আপনারা এখানে ক্লিক করে ও এ প্রবন্ধটি পড়ে তা অনায়াসে জানতে পারেন।

 এ মাদরাসা হতে চাকুরী ছেড়ে দেয়ার পর বেশ কিছু কাল অর্থাভাবে আমার যেন মরণ দশা হয়ে গিয়েছিলো। এলাকায় আমায় কেউ চাকুরী দেয় না। আসলে দেয় না বললেও মনে হয় ভূল হবে। আমার ভিতরকার এ জ্বীন সম্প্রদায়ই মনে হয়, কী এক অজানা কারণে আমাকে চাকুরী দিতে, আমার শারীরীক উপস্বর্গের মাধ্যমে, আমারই ইশারা-ইঙ্গিতে মনে হয় নিষেধ করে! আমাকে সবাই যেন খাদ্যাভাবে মেরেই ফেলবে! এমনই এক করুণ অবস্থা আমার! এমনকি নিজ ভাই-ভাতিজারাও আমাকে যেন দূর দূর করে! মাঝে মধ্যে চিন্তা করি এরা কেমন করে পেট পুরে খায়; পাশেই আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে প্রায় অভূক্ত রেখে!! এঁরা কি তাহলে খাঁটি মুমেন না!! অবশ্য সকল ভাই না। কেউ কেউ মাঝে-মধ্যে কিছু সহযোগিতা করে। যাকাতের টাকা পয়সা দেয়। সরকারি দান-খয়রাত নিয়ে দিতে চেষ্টা-তদবীর করে। বাড়ির বাইরের দুই একজন ছাড়া তেমন কেউ অবশ্য এ ধরনের সহযোগিতা বা এসব টাকাও দেয়নি। কারণ আমি যতই গরীব হই না কেন; যতই অভূক্ত থাকি না কেন; আমি কিন্তু কাউকেই সেজদা দিই না, কারো কাছে হাত পাতি না; উচ্চ ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলি। তবে দেখলাম মানুষ গুলোর মধ্যে আসলে দয়া-মায়া বলতে, তেমন কিছু নেই!

এর মাঝে উত্তর চাঁদপুর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) মাদরাসার (দাখিল মাদরাসা) সুপার জনাব হযরত আইউব আলী (দা.বা.) হুজুর আমাকে তাঁর মাদরাসায় হিসাব রক্ষক এর চাকুরী করার সুযোগ দেন। এবং কোচিং এরও ৩টি ক্লাস আমায় দেয়া হয়।

তবে এখন আমি আর আগের মতো পড়াতে পারি না। পড়াতে গেলে, ধরুন, ছাত্রদেরকে যখন পড়াই, এ প্লাস বি হোল স্কয়ারের সূত্র; ছাত্ররা তখন একেবারেই লেখাপড়ার দিকে মনযোগী হয় না। তারা আমার ভিতর খুঁজে ফিরে a কোনটা, আর b কোনটা। লেখাপড়া বাদ দিয়ে ওরা বিভিন্ন ইশারা ইঙ্গিতে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে ওরা কথা বলে জ্বীনের সাথে। বার বার ওরা আমার জ্বীনের কাছে জানতে চায়, সে কখন আসবে! লেখাপড়ার কথা কিছু বললে ওরা প্রায় শুনেই না। অনেক সময় জ্বীনের সাথে কথা বলতে গিয়ে এ কোমলমতি শিশুরা আমাকে চরম ভাবে তাচ্ছিল্য করে। এবং মনে করে যে শুধু জ্বীনই সম্মান পাওয়ার যোগ্য! আমি কিছু না! অথবা জ্বীনকে ভয় পেলেও, আমাকে ভয় পায় না! আর অল্প বয়সের ছেলে পেলে সবকিছু তাদের জ্ঞানে ধরেও না। ফলে প্রায় সময়ই তারা আমায় ভূল বুঝে ও আমায় দোষী সাব্যস্ত করে। এবং এতে তারা আমার কথা শুনে না ও অনেক সময়ই তারা আমার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকায়। ফলে এ যেন এক আমার মারাত্মক মানসিক যন্ত্রণা! এ পরিস্থতিটি আগের দুইটি মাদরাসায়ও ঘটেছিলো। এবং সমাজেতো এর প্রচলন রয়েছেই!!

এ মাদরাসার সুপার অবশ্য আমার প্রতি অনেক দয়া-মায়া রাখেন। আমি ভাতে মরছি, এ জন্য তিনি দয়াদ্র হয়ে আমাকে চাকুরিটা দিয়েছেন। তাঁর দয়া মায়া দেখেই, আমিও মূলত তাঁর মাদরাসায় তাঁদের সকলের নিকট দোয়া প্রাপ্তির আশায় তাঁর মাদরাসায় চাকুরী করতে যাই।

এ মাদরাসায় প্রবেশ করার পরই সর্ব প্রথম আমার এলাকায়, আমার সাথে যে ভালো জ্বীন রয়েছে; মানুষ তা বুঝতে পায়। এবং ধীরে ধীরে আমার আগের দূর্ণাম ঘূচতে থাকে। ও আমার ইশারা-ইঙ্গিত গুলোর ভালো দিক সমূহ মানুষ আস্তে আস্তে বুঝতে আরম্ভ করে।

তখন এক পর্যায়ে মনে হলো; জ্বীন ও মানুষের বিয়ে জায়েজ কিনা! জ্বীন দুনিয়াতে মানুষের মতো জায়গা জমি কিনে সম্মানের সহিত মানুষের সাথে, মানুষের পাশাপাশি বাস করতে পারে কিনা! এবং আমার এ পরীর সাথী পরীগণ অথবা তার সম্প্রদায়ের সদস্যদেরকে দাসী হিসেবে আমার কাছে রাখতে পারি কিনা! এসব বিষয়ে যদি বাংলাদেশের কোন গ্রহণ যোগ্য মাদরাসা বা ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের লিখিত ফতোয়ায় হ্যাঁ বোধক উত্তর পাই, তবে আমার পরী হয়তোবা সম্পর্ক গড়ার মাধ্যমে এবং মানব আকৃতিতে আমার কাছে চলেও আসতে পারে। এ বিষয়টি রিসার্চ করে দেখি যে, যতই এ বিষয়ে চিন্তা করি, ততই আমার কাছে যেন ভালো লাগছে। পরে এ বিষয়ে আরো গবেষণা করে নিশ্চিত হলাম যে, হ্যাঁ, হয়তোবা বিষয়টি সত্যই হবে! সে হয়তোবা আমাকে বিয়েই করতে চাচ্ছে এবং এ প্রমাণ করতে চাচ্ছে যে, জ্বীন ও মানুষের বিয়ে জায়েজ! মাসআলাটি জগতে হয়তোবা ভূল হিসেবে শেখানো হয়েছে! জগত থেকে একটি ভূলের সংশোধন করাও হয়তো তার লক্ষ্য!

এবং এরপরই শুরু করলাম ফতোয়ার আবেদন লিখা। প্রথম লিখলাম, ফেনী কোর্ট মসজিদের পাশে জামিয়া ইবনে আব্বাস, এ মাদরাসার ফতোয়া বিভাগে।

অনেক কষ্ট করে লিখছিলাম। কারণ আমার কম্পিউটারটি অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। ভাতিজার কাছে একদিন বিশেষ প্রয়োজনে অল্প কিছুক্ষণের জন্য চেয়েও সে তার কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেয়নি। নিজের পুরোনো মোবাইল একটা দিয়ে গুগল ড্রাইবের মাধ্যমে লিখতে গিয়েও সে অনেক কষ্ট। কারণ আমার ঘরে এখন ইন্টারনেট প্রবেশ করে না। আমার কাছে মনে হচ্ছে, যে কোন ওয়েতে এবং কেন যেন আমার পরীর দলেরাই হয়তো ইন্টারনেট বন্ধ করে রেখেছে। ফলে একটা নতুন বিষয়, যে বিষয় গুলো পূর্ব থেকে নাজায়েজ বা ইনএক্টিভ হয়ে আছে; এ ধরনের বিষয় গুলো একটু বুঝিয়ে লিখা প্রয়োজন। ইত্যাবসরে আমাদের উত্তর দিকের মোস্তাফিজ চেয়ারম্যান বাড়ির দরজায় মসজিদের পাশের দোকানদার আমাকে আমার মোবাইলে তার ব্রড ব্যান্ডের ইন্টারনেট কানেকশান বিনামূল্যে প্রদান করলেন। সে সুবাধে এ মসজিদের বারান্দায় বা মাঠে বসে, আমার প্রয়োজনীয় লিখা গুলো সম্পন্ন করছি! তাও অনেকের বুঝে ধরে না, আমি কি লিখি এতো! এছাড়া কেউ কেউ বলে, ভেতরে আসছো যে, বারান্দার ফ্যান বন্ধ করে আসছো!?

তো যাই হোক, ইবনে আব্বাস মাদরাসা আমার দরখাস্তের কোন প্রতি উত্তর দেয়নি। আমি যোগাযোগ করলে বলতো, হুজুরকে বলতে পারিনি! হুজুর ব্যস্ত। ইত্যাদি।

 যেদিন ইবনে আব্বাস মাদরাসায় যাই, সেদিন, এ মাদরাসায় দরখাস্ত জমা দিয়ে, এর পর ফেনীর লস্কর হাটে প্রতিষ্ঠিত ফেনীর বিখ্যাত মাদরাসা, যে মাদরাসার ছাত্র সংখ্যা আনুমানিক দশ হাজার হবে, সে মাদরাসাও দরখাস্ত জমা দিই। উনারা মোটামুটি আগ্রহ ভরেই দরখাস্ত গ্রহণ করলেন। খুশি হলাম এবং মনে মনে ভাবলাম, এঁনারা মনে হয় উত্তর দিবেন ও পজেটিভ উত্তর দিবেন। এখানে প্রশ্ন লিখেছিলাম শুধু ১টি বিষয়ের উপর।

তখন উনারা আমাকে ওখান থেকে আরো একটু দূরে আরেকটি মাদরাসায় পাঠান, আমার জ্বীন পরীক্ষা করতে (জ্বীন ফারুকের মাদরাসা)। সেখানকার হুজুরকেও দেখলাম আমার প্রতি পজেটিভ। ভাবলাম, যাক আমার একটা বিহীত হবে।

কিন্তু কিছুদিন পর প্রাসঙ্গিক ও আনুসাঙ্গিক আরো প্রশ্ন লিখে যখন, জমা দেয়ার উদ্দেশ্যে যখন উনাদেরকে ফোন করি; তখন উনারা বলেন; আপনি কোন ফতোয়ার আবেদন নিয়ে আমাদের নিকট আসবেন না। এমনি আসতে পারেন। এতে আমি মানসিক ভাবে কিছুটা আঘাত খেলাম। এরও কিছু দিন পর এ মাদরাসা থেকেই আমাকে ফোন করে বলা হলো, আপনার এ প্রশ্নের উত্তর যদি কেউ বা অন্য কোন মাদরাসা থেকে দেয়, তবে আমাদেরকে জানাবেন।

এতে আমি মর্মাহত হলাম। কারণ এ মাদরাসার জন্য আমি প্রায় ৩০ পৃষ্ঠার মতো, আমার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে ও উত্তর পাওয়ার আশা করে লিখেছিলাম এবং তাঁরাও উত্তর প্রদানের আশা দিয়েছিলেন।

আবার হঠাৎ নিষেধ করলেও তবুও কিন্তু দমে যাইনি।

এবার লিখাটিকে কাট-সাট করে, আবার ২৪ পৃষ্ঠায় লিখলাম বাংলাদেশের ২টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের জন্য। অবশ্য প্রতিষ্ঠান দু'টিতে যোগাযোগ করেই লিখেছি। এর একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ি বড় মাদরাসা এবং অন্যটি হচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ।

তাদের সাথে যোগাযোগ করে গত ১৬/০৭/২০২৫ ইং তারিখ বুধবারে দরখাস্ত দু'টি জমা দিয়ে আসি। গতকাল এ দরখাস্ত দু'টির কী অবস্থা জানতে চেয়ে ফোন করলে, মাদরাসা থেকে জানানো হয়, তাদের সামনে পরীক্ষা; সময় লাগবে। আর ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বলা হয়; ডিজি স্যার (মহাপরিচালক) আমার সাথে কথা বলতে চান। আমি যেন বৃহস্পতিবারদিন (২৪/০৭/২৫ ইং) সকাল ১০টার মধ্যে স্যারের সাথে স্বাক্ষাতকার প্রদান করি। আমি বললাম, আলহামদুলিল্লাহ! ঠিক আছে।

হাঁসি মুখে প্রতি উত্তরটা দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু পকেটে টাকা নেই। ভাবছি কী করা যায়! অবশ্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ১০০০ টাকার মতো আছে। তবে থাকলেও ঘরের মানুষ গুলো কি মরে যাবে!? এদের জন্য সবজিও যদি অল্প কিছু না কিনি এরা বাঁচবে কিভাবে?

আপনাদেরকে বলেই ফেলি, হুজুর মাদরাসায় আমাকে হিসাব-কিতাব বাবত দিবে ৩০০০ টাকা এবং কচিং বাবত দেয়ার বিষয়টি ধার্য হয়েছে ২০০০ টাকা। তাও টাকাটা ২/৩ মাস পর পর দিবেন হুজুর। প্রতি মাসে দিতে পারেন না। কারণ ফান্ডে টাকা থাকে না। গরীব মাদরাসা। আমাকে হয়তো দিয়েও দিতে পারেন!

এবার আপনারা বলেন, এ ৫০০০ টাকা দিয়ে আমি কি ঢাকায় আসা-যাওয়ার ভাড়া দিবো? না, প্রশ্ন রেডি করবো? না জ্বীন বিষয়ক বিবিধ সমাধান করবো? না ঘরের আমার আম্মা সহ ৭ জন সদস্যকে বাঁচিয়ে রাখবো? তাহলে এতো আর্থিক অনটনের মধ্যে আমার মতো এ রকম দৈত স্বত্ত্বার ও উচ্চ মানসিকতার একজন ব্যক্তিত্ববান পূরুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম কি চালিয়ে যাওয়া যায়? এমনকি আমার এ পরিস্থিতি আজ একদিনের নয়! সবমিলিয়ে সেই সমিতি বন্ধ হওয়ার পর, মানে আইসিএসটি থেকে চাকুরী ছেড়ে দেয়ার পর; মানে আজ প্রায় ৫ বছর যাবৎ এ অবস্থা!  ধরুন, আপনারা একদম স্বাভাবিক মানুষ। আমার মতো কোন ঝামেলাই নাই আপনাদের। তবুও আপনিও যদি ৫০০০ টাকা করে বেতন পান; আর ঘরে ৬/৭ সদস্য থাকে এবং ঘরে ৪ ছেলে মেয়ের সবাই লেখাপড়া করে ও ৬/৭ লক্ষ টাকা মানুষ ঋণ পায় আপনার নিকট এবং আজ প্রায় ৩ বছর যাবৎ দিতে পারছেন না। ভাই, আপনি সত্য করে বলেন, আপনি কি সুস্থ থাকবেন!? আবার ব্যক্তিত্ব বজিয়েও চলবেন!? আবার জ্বীন জাতিকে ওপেন করা ও তাদের স্বরূপ উন্মোচিত করার সংগ্রামেও জয়ী হবেন!? 

আবার জ্বীন জাতির সাথে এবং মানুষের সাথে; জ্বীন জাতিকে ওপেন করার বিষয়ে, আমার যে জেহাদ; এ জেহাদকে কি একেবারে সাধারণ কোন জেহাদ বলে মনে হয় আপনাদের কাছে?

একটা জাতি এবং যে জাতিকে মানুষ অনেকটা সৃষ্টির শুরু থেকেই খারাপ মনে করে; এমনকি যাদের নাম শুনলেই অনেকে ভয় পায়; তাকে হাজার রকমের মন-মাইন্ড এর মানুষ ও জ্বীনের মধ্যে এবং প্রায় অভূক্ত একটা লোক, তার পরিবারের সদস্য সহ ভবিষ্যতের কোন সম্ভাবনা না দেখে ও তার হাজার প্রকারের ক্ষতের মধ্যে এবং তার বা জ্বীনের বিষয়ে মানুষকে পূর্ব থেকে কিছু বোঝানোর কোন সুযোগ না রেখে; তার উপর অনেকগুলো জটিল বিষয়ে; যেগুলো শুনলেই মানুষকে মহা পাপী ভাবতে পারে মানুষ; শরিয়তের এ রকম কিছু বিষয় নিয়ে; মানুষের মাঝে একটা ভালো বিশ্বাস জন্মানো; এমনকি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর যুগেও যে মাসআলা গুলোর সমাধান হয়নি; যে গুলো সেই ইসলামের প্রথম যুগ হতে নাজায়েজ বা ইনএক্টিভ হিসেবে স্বীকৃত; এগুলোকে জায়েজ হিসেবে স্বীকৃতি এনে; জ্বীনকে ওপেন ও আপন করার সংগ্রামে; আলেম নয় এ রকম একজন সাধারণ মানুষের জয়ী হওয়া; এটা কোন সাধারণ জেহাদ হতে পারে!!??

আজকে উত্তর চাঁদপুর মাদরাসায় বলেছি, হুজুর আমাকে যেন কোচিং ক্লাসে টিচিং দেয়া থেকে রিলিজ দেন। শুধু অফিসে হিসাব কিতাবের দায়িত্বটা বহাল রাখতে চাই। কারণ, হুজুরকে বললাম, ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আমি পড়াতে গেলে বিন্দুমাত্রতো পড়েই না, উপরন্তু যখন মেয়েদেরকে বলি, লিখ, তখন মেয়েরা বলে লিখবো! আবার ছেলেদেরকে যখন বলি, এক্স প্লাস ওয়াই হোল স্কয়ার; তখন ছেলেরা বলে, এখানে মনে হয় স্যার এক্স এক্স স্কয়ার; এ রকম একটি অভদ্র পরিবেশ বলেই আমার মনে হয়। যেহেতু আমার নিয়ত হচ্ছে, দাসীদেরকে রেখে, তাদের মাধ্যমে বাবা হওয়া! আর এ অবস্থা গুলো আমার জ্বীন আকার ইঙ্গিতে সব প্রকাশ করে দেয়। ফলে কেউ একটু বুঝে, আর কেউ বুঝেই না। বরং ভূল বুঝে! এহেন পরিস্থিতে ছাত্রদের লেখাপড়াতো হচ্ছেই না, বরং একটা যেন ক্রীড়া-কৌতুক, আর মনেহয় বেয়াদব মার্কা নাটক হচ্ছে। এতে আমার ব্যক্তিত্ব লেস হচ্ছে, যা আমার ব্রেনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। আসলে পড়ানোর নামে, তাদের অন্য কোন গুপ্তীয় উদ্দেশ্যের শীকার হয়ে, আমি শুধু শুধু বেতন নেবো কেন? ফলশ্রুতিতে আমি কি মাদরাসা কর্তৃপক্ষের নিকট ঋণী হয়ে গেলাম না? এবং এর দায় স্বরূপ, আমি কি সত্য ও ন্যায়ের বিপরীতে মাদরাসাকে কি কিছু দিতে পারবো?

যাক, আমার আবেদনের বিপরীতে হুজুর বললেন, আরেকজন নিয়োগ দেয়া পর্যন্ত আমাকে থাকতে হবে। এবার আমি বললাম, হুজুর! আমি আপনাকে হারাতে চাই না। আমি আপনার হিসাব কিতাবের দায়িত্ব পালন করতে চাই। শুধু ক্লাস থেকে রিলিজ চাই। এবার হুজুর বললেন, আমরা তাহলে, কয়জন টিচার নিয়োগ দিবো?

হ্যাঁ, ঠিকইতো এতো খন্ড খন্ড কাজে, এতো অল্প বেতনে তিনি অন্তত মোটামুটি যোগ্য টিচার কোথায় পাবেন?

ভায়েরা, কালকে ২৪/০৭/২৫ ইং তারিখে, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ থেকে আমার যে সাক্ষাতকার চেয়েছেন; সে উদ্দেশ্যে ইনশা'আল্লাহু তা'য়ালা খুব ভোররাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবো। 

মহান রবের নিকট কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি, (সাঃ) আমার যাওয়া থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত সকল কাজের সাথী হিসেবে; বিশেষ করে স্বাক্ষাতকার যাতে ফলপ্রসু ভাবে দিতে পারি এবং পুরো স্বাক্ষাতকার জুড়ে, আমার সাথের এ জ্বীন বা জ্বীন সম্প্রদায় যাতে সারাক্ষণ ক্রিয়েটিভ থেকে এবং তার পূর্ণ প্রজ্ঞা ও কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে আমার ফতোয়ার আবেদনে উল্লেখিত প্রশ্ন সমূহের পজিটিভ প্রতি উত্তর প্রাপ্তির বিষয়টি যাতে নিশ্চিত করে আসতে পারি, এ জন্যে মহান রবের নিকট অন্তর থেকে প্রার্থনা করছি। যাতে মাদরাসায় আমার আবেদনটি আমি মঞ্জুর করতে পারি। যেহেতু আমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষককে বলেছিলাম, ইনশা'আল্লাহ আমি যে সীদ্ধান্তই নিই, তা দুনিয়ার কেউ পরিবর্তন করতে পারে না; যেহেতু আমি আল্লাহর আইন অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নিই।

ইয়া আল্লাহ! তুমি আমার আগামী কালের সফর ও আমার স্বাক্ষাতকারের বিষয়টি তোমার কোরআন ও রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর সুন্নাহ অনুযায়ী কর এবং এ বিষয়ে আমাকে কামিয়াব কর। (সাঃ)।

হ্যাঁ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি এর সাথে যথা সময়ে দেখা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ! স্যার আমাকে চিনতে পেরেছেন যে, আমি একজন জ্বীন সদস্য! তিনি তার মুফতি সাহেবকে ডাকলেন এবং আমাকে তার সাথে তার রুমে যেতে বললেন। তিনি আসলেন এবং আমাকে নিয়ে তার রুমে গেলেন।

যখনই তার রুমে কথা উঠলো জ্বীনের সাথে মানুষের বিয়ে জায়েজ কিনা; তখনই তিনি বেঁকে বসলেন এবং বললেন, না এ ধরনের বিয়ে হতে পারে না।

এখন দেখার বিষয় হচ্ছে উনারা লিখিত প্রতি উত্তর দিবেন কিনা! এবং দিলে সেখানে কী লিখবেন!? আমি সে প্রতিক্ষার প্রহরই গুনছি!

অন্যদিকে যাত্রাবাড়ি মসজিদেও যেদিন প্রশ্ন জমা দিতে গিয়েছিলাম, সেদিনও, হুজুর কর্তৃক আমি হয়েছিলাম অপমাণিত।

সেদিন আমার প্রশ্ন সমূহ মাদরাসার ফতোয়া বিভাগে জমা দিয়ে মনে করলাম মাদরাসার প্রধান মুফতি মাহমুদুল হাসান স্যারের সাথে দেখা করে আসবো। এ লক্ষে অপেক্ষ করতে থাকলাম। শুনলাম তিনি বেলা ১১ টার দিকে আসবেন। সকাল পৌনে ৯ টা থেকে প্রায় বেলা সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর; হুজুরের খাদেমের সাথে দেখা হলো। তিনি জানালেন, হুজুর এখন আসলেও কারো সাথে স্বাক্ষাতকার দিবেন না। তিনি এসেই ক্লাসে চলে যাবেন। হুজুরের স্বাক্ষাত পেতে হলে আমাকে আসরের পরে আসতে হবে।

অগত্যা সেখান থেকে চলে এলাম এবং বেলা সাড়ে ৩ টার সময় আবার গেলাম ও অপেক্ষা করতে থাকলাম। সূর্য ডুবার ২০/৩০ মিনিট আগে হুজুরের রুমে প্রবেশের অনুমতি পেলাম।

হুজুরের রুমে প্রবেশের পর, যেই মাত্র বললাম, যে হুজুর, আপনার সাথে দেখা করার জন্য, আপনার একটু দোয়া পাওয়ার জন্য, সেই সকাল থেকে অপেক্ষা করছি!! আমি ফেনী থেকে এসেছি!!

অমনি হুজুর রেগে গেলেন। বললেন, আপনাকে কি আমি দেখা করতে বলেছি!? না অপেক্ষা করতে বলেছি!? আপনি আমার সেকায়েত করলেন কেন!? বেরিয়ে যান আমার রুম থেকে!

যথেষ্ট অপমাণিত হলাম। মনে বড় কষ্টও পেলাম। কিন্তু বুঝলাম না, কেন হুজুর আমার সাথে এ রকম ব্যবহার করলেন!! 

একটা মানুষ ভিন্ন জেলা থেকে এসে সারাদিন অপেক্ষা করার পর এবং পুনরায় ঐদিনই বাড়ি ফেরার টেনশন নিয়ে, আপনাকে বিষয়টির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে ও বেশি করে আপনার দোয়া পাওয়ার উদ্যেশ্যে কথাটি বলল; অথচ আপনি!? লোকটি কী জন্য আপনার নিকট এসেছে, তাও শুনতে চাইলেন না।

সম্মানীত মুফতি! কাজটি কি আসলেই ভালো করলেন!? হয়তো আমাকে আপনি জ্বীন বলে চিনতে পারলেন। কিন্ত জ্বীন হলে কি এ রকম ব্যবহার করতে হবে? কই, জ্বীন হিসেবে আমিতো আপনার সাথে কোনরূপ খারাপ ব্যবহার করিনি!!

প্রশ্নগুলো জমা দেয়ার প্রায় ১ মাস পর আজকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে প্রশ্নগুলো কোন্ অবস্থায় আছে, তা জানতে চেয়ে মুফতি সাব হুজুরকে মোবাইল করলে তিনি জানালেন, তারা এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেন না। তিনি আমাকে তদবীর করার পরামর্শ দিয়েছেন।

অন্যদিকে যাত্রাবাড়ি মসজিদে ফোন করলে, ফোন রিসিভ করে তারা জানালেন, তাদের বড় হুজুর নাকি শুধু মৌখিক উত্তর দিতে বলেছে এবং এও বলেছে, জ্বীনের সাথে মানুষের বিয়ে হারাম। আমি লিখিত উত্তর দিতে অনুরোধ করলে; অপরপ্রান্ত থেকে অপেক্ষা করতে বলা হলো।

এ ফাঁকে আপনাদেরকে নিজ মনের দুঃখময় কিছু কথা বলে নিজকে একটু হালকা করার চেষ্টা করি।

আজকে আমার এক সহকর্মী শিক্ষক হুজুর আমার পকেটে হাত দিয়ে ৫০০ টাকা নিয়ে নিয়েছেন। তার কথা হলো তিনি আমার কাছে সমিতির টাকা পাবেন।

ভাই, আমার ইনকাম মাত্র ৫০০০ টাকা। আপনারা জানেন, ঘরে আমার আম্মা সহ সদস্য সংখ্যা ৭ জন। আপনারাই বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমি ঋণশোধ কিভাবে করি!?

দেখুন, আমার বর্তমান বয়স প্রায় পঞ্চাশের মতো; আমার কোন সম্পদ নেই এবং উল্লেখ যোগ্য কোন ইনকাম অব সোর্চ নেই ও এ কারণে আমার অন্ধকার ও অনিশ্চিত ভবিষ্যত, আমি প্রায় একা, জ্বীন কর্তৃক শরীরে উদ্ভবকৃত আমার জটিল রোগ সমূহ, যা সহজে ভালো হওয়ার নয়, জ্বীনের কারণে কোথাও স্থায়ী চাকুরী করতে না পারা, জ্বীন কর্তৃক আমাকে পরাধীন বা কয়েদীর মতো করে রাখা, স্বাধীন ভাবে কিছুই করতে না পারা, শরীরে জ্বীন থাকায় যে কোন শারীরিক-মানসিক অবস্থা ও পরিস্থিতিতে মানুষ আমাকে বুঝতে না পারা, চারদিকে আমার নামে শত-সহস্র অপ-প্রচার, মানুষ কর্তৃক আমাকে শয়তান মনে করা, বিশেষ করে ছোট বাচ্ছা বা বালক ছেলেদের তাচ্ছিল্য, চারদিকে ঋণের বোঝা; এদিকে আবার আমার উচ্চাভীলাসী, সত্যনিষ্ঠ, অতি উদার ও সরল মন ইত্যাদি কারণ নিয়ে আমার যে সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট; কথার কথা এর যদি শুধু ১ ঘন্টার কষ্ট পুরো গ্রামবাসিকে ভাগ করে দিই, তাহলেও আমার মনে হয় তাদের সকলের কষ্ট অসহ্য হয়ে যাবে; এ রকমই আমার বর্তমান অবস্থা!! এ অবস্থায় আপনাদের আন্তরিকতা আর দোয়াই পারে আমাকে শান্তিপূর্ণ ভাবে বেঁচে থাকার পথে নিয়ে যেতে। তাই আমি আপনাদের সকলের আন্তরিকতা, ভালোবাসা আর দোয়া প্রার্থী!











 সঠনজফফবপফ ষফডছনশল হডঠডঠপশল হডছটধদনজজ ষঠছজটধচপঠজঠছ ফঠপপপঠফডড ডজঠপনপঠফফ