মাদরাসার প্রধান, মুফতী ইয়াছিন বিন আহমাদ

আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। 
[গত ২০/১০/২৪ ইং তারিখে মানিকপুর জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদরাসা, বসুর হাট, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালি; এ মাদরাসায় জেনারেল টিচার হিসেবে যোগদান করেছিলাম। কিন্তু পরের মাসের ১৭ তারিখে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে বাধ্য হই। চলে আসার সময়, মাদরাসার মোহতামিম হুজুর আমার কমপক্ষে ৯০০০ টাকার মালামাল (নিচে মালামাল গুলোর চার্ট উল্লেখ করেছি), আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে মাদরাসায় রেখে দিয়েছেন ও ঐ চলতি মাসের ১৭ দিনের বেতন আমায় দেন নাই। যা ছিলো আমার প্রতি জুলুম! আমি পাঠক সমাজের মাধ্যমে, তাদের নিকট এগুলো ফেরত পেতে চাই। এবং দেশবাসিকে সতর্ক ও সচেতন করতে চাই। প্রিয় পাঠক, দয়া করে আপনারা, আমাকে এগুলো ফেরত দিতে, তাদেরকে কিছু বলুন।]

[বিঃদ্রঃ মাদরাসার প্রধান, মুফতী সাহেব হুজুরকে অন্যান্য দিক দিয়ে ভাল বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে; কিন্তু মাদরাসায় এ ধরনের অবিচার ও জুলুম মূলক নিয়ম-কানুন কেন রাখবেন তিনি বা তারা অথবা আমার মালামাল গুলো কেন কেডে রেখে, ফেরত দিতে জটিলতার সৃষ্টি করবেন। আমি এর প্রতিকার চাই।]

পবিত্র রমজান মাসের শেষের দিকে, আজ ২৮শে রমজানে, সবাইকে দুনিয়াতে কল্যাণ ও আখিরাতে মুক্তি বা নাযাত পাওয়ার লক্ষে প্রচেষ্টা চালাতে আহবান করে, শুরু করছি মাদরাসায় শিক্ষকদের প্রতি অবিচারের একটি চিত্র বা আমার প্রতি নিপীড়িত করা জুলুমের বিবরণঃ

[পোস্টটি ফেসবুকে শেয়ার করা হবে; তাই আশা করি পোস্টটি, যাদের প্রতি আবেদন করে বা যাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে লিখা হয়েছে, তারা ফেসবুকের কল্যাণে এমনিতেই পাবেন। তবুও আমি পোস্টটির লিংক, উঁনাদের ইমো এবং হোয়াটস এপে শেয়ার করবো। আশা করি তারা এর প্রতি উত্তর দিবেন এবং আমার ১৭ দিনের বেতন ও আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া আমার কমপক্ষে ৯০০০ টাকার কাপড়-চোপড় ও মালামাল ফেরত দিবেন কিনা, এ বিষয়টি তারা জানিয়ে, আমাকে ধন্য করবেন।]

একজন টিচার হিসেবে, আমার প্রতি বা টিচারদের প্রতি এ মাদরাসা কর্তৃক আরোপিত বা নিপীড়িত কিছু জুলুমের বিবরণ নিম্নরুপ-

১। এ মাদরাসার নিয়োগপত্রে আমাকে শর্ত দেয়া হয়েছে পূর্ণ ২ বছর চাকুরী করতে হবে। (নিয়োগপত্রের ফটোকপি নিম্নে আপলোড় করা হয়েছে) এ শর্তে রাজি থাকলে শুধু তখন, নিয়োগপত্রে সই করে, চাকুরিতে যোগদান করতে বলা হয়েছে এবং সই করার সময়ও আমাকে বলা হয়েছে, এ শর্ত সমূহে আমি রাজি কিনা? আমি রাজি আছি বলেই সই করেছিলাম।  

২। নিয়োগপত্রের আরেকটি শর্ত হচ্ছে, চাকুরি ছেড়ে দিতে হলে, কমপক্ষে ২ মাস আগে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। অন্যথায় ২ মাসের বেতন মাদরাসা ফান্ডে জমা দিতে হবে। মানে ফেরত দিতে হবে। অপরদিকে নিয়োগপত্রের আরেকটি শর্তে আমার প্রতি বলা হয়েছে, আমাকে যদি মাদরাসা কর্তৃপক্ষের পছন্দ না হয় (অসুদউপায় অবলম্বন, অনৈতিক আচরণ ইত্যাদি কারণে), তাহলে ১ সপ্তাহের নোটিসে আমাকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বরখাস্ত করতে পারেন বা চাকুরী হতে অব্যাহতি দিতে পারেন অর্থাৎ আমাকে চলে আসতে হবে।

৩। আমার বেতন ধরা হয়েছিলো এতো অল্প মানের, যা বলতে লজ্জ্যা করছে। যেহেতু তাদেরকে আমি অন্যায়কারী বা জুলুমবাজ সাব্যস্থ করেছি, তাই বলতে বাধ্য হলাম। যা ছিলো মাত্র ৬০০০ টাকা।

আপনাদের জ্ঞাতার্থে নিয়োগপত্রটি নিম্নে পেশ করলাম-


৪। সেখানে আমার প্রতি সবচাইতে যে জুলুমটি করা হয়েছে, তা হচ্ছে, আমি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে আসবো বলার পর, মাদরাসার মোহতামিম হুজুর (উপরে যার ছবি আপলোড় করা হয়েছে) ছাত্রদের সামনেই, আমার সাথে অপমানমূলক ব্যবহার করে, আমার কমপক্ষে ৯০০০ টাকার কাপড়-চোপড় ও মালপত্র আঁটকিয়ে ফেলেন।

যা আমাকে আনতে দেননি এবং আমার ধরানো সি এন জি গাড়ি বাতিল করতে হয়েছে আমাকে। 

অথচ আমার প্রতি, এ মোহতামিম হুজুরের গুণগান প্রচারের কারণেই ঐ এলাকায় আমি ফেরেশতার মতো বা আমার সাথে ফেরেশতা আছে বলে সাব্যস্তকৃত হয়েছিলাম এবং বেতন কম বিধায় এক ধরনের তাচ্ছিল্যের সম্মান প্রাপ্ত হচ্ছিলাম। 

অবশ্য হুজুর আমাকে হারাতে না চেয়ে, চলে আসতে দিতে না চেয়ে আমাকে মসজিদে থাকতে দিবেন (ক্লাসরুমে নয়) এবং এ মাস থেকেই আমার বেতন বৃদ্ধি করে দিবেন। এ প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন। (উনার উত্তেজিত মূহুর্তে)। 
কিন্তু যেহেতু আমি পদত্যাগপত্র দিয়ে দিয়েছি (পদত্যাগপত্রটি একরাত অফিসে রেখেছিলাম, পরেরদিন হুজুর এটি ফেরত দিয়েছেন); তাই ইনশা'আল্লাহ আমার কথার মূল্য রয়েছে বিধায়, আমি তা আর ফিরাইনি। হুজুর একাই আমাকে বকেছেন, রাগ দেখিয়েছেন; আমি কিছুই বলিনি, কোন ধরনের বাক-বিতন্ডা করিনি, কোন ধরনের রাগ আমার নিকট থেকে প্রকাশিত হয়নি।

যেহেতু পদত্যাগপত্র দিয়েছি এবং চলে আসবো বলে স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েছি; তাই তাদের স্বার্থের পরিপন্থী হওয়ায়; যেই মানুষটি তাদের চোখে ফেরেশতার মতো ছিলাম; সেই মানুষটিই বিনা কারণে দোষী সাব্যস্থ হলাম। এই হলো মুফতী সাহেব! এই হলো তার আইন ও বিচার! না হয় আমার ন্যায্য প্রাপ্য দিচ্ছেন না কেন জনাব?

 সাধারণত আমি এতো কথা বলিও না; আর কথা বলে ফেললে, তা আমি সহজে প্রত্যাক্ষানও করি না। এটা আমার প্রাকৃতিক স্বভাব।  

আর আমার প্রতি এ ৪ নং জুলুমটি করা না হলে, হয়তো আজকের এ পোস্টটিও আমি লিখতাম না। 

 মালামাল গুলো কী কী ছিলো, এবং এর অর্থমূল্য কত, তা বুজাতে, নিম্নের ফটোকপির মাধ্যমে, মালামালের বিবরণ ও অর্থমূল্য পেশ করলাম- 



৫। চাকুরী ছেড়ে দিয়ে আসার সময়ের অর্থাৎ নভেম্বর ২০২৪ সনের ১৭ দিনের বেতন আমাকে দেয়া হয়নি।

যেহেতু মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদানকৃত নিয়োগপত্রেই আমাকে করা হয়েছে জুলুম এবং যেহেতু আমি পদত্যাগ পত্রদিয়ে ও মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে জানিয়ে, সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে, এরপর পদত্যাগ করেছিলাম। অথচ তারা (মুহতামিম ও সহ মুহতামিম) আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে, গ্রহণ করার জন্য আমার রিকোয়েস্ট প্রত্যাখান করে, আমার প্রতি সেই এক অবিচার ও অপমাণ করেছেন এবং যে কারণ গুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে আমার ১৭ দিনের বেতন না দিয়ে, এখানে করেছেন আরেকটি চরম জুলুম।

৫। আমার মালামাল গুলো আনতে চেয়ে, মাদরাসার মোহতামিম হুজুরকে যখন ফোন করি, হুজুর আমার প্রতি কোন ভূল করেছেন কিনা, সে সন্দেহ করে এবং হুজুরকে শ্রদ্ধা করে ও আন্তরিকতার সহিত যখন ফোনে বলি, "যে হুজুর, বেড়াতে আসবো, না শুধু মালামাল গুলো নিতে আসবো?" তখন হুজুর অপমানের সহিত আমার মুখের উপর বলেন যে, আমার মতো এতো খারাপ মানুষকে মেহমানদারি করা, মাদরাসার পক্ষে উচিত হবে না এবং অন্যায় হবে। এবং আজ ৫ মাস অতিবাহিত হলেও হুজুর এ পর্যন্ত কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করায় ও হুজুরের এমন ব্যবহারে আমি বুঝে গেলাম, হুজুর আমার কাপড়-চোপড় ও মালামাল যে কেড়ে নিয়েছেন, তা জেনেশুনে সুস্থ মস্তিষ্কেই নিয়েছেন। যা আমার ব্যক্তিত্ব ও মনুষত্বে চরম আঘাত হেনেছে। এবং আমার প্রতি ব্যবহার মূলক জুলুম করা হয়েছে ও আমি অপমানিত হয়েছি।

 হুজুর আমার কাপড়-চোপড় গুলোতো দিলেনইনা, আমাকে বললেন, মালামাল গুলো নিতে হলে, সভাপতির কাছে ফোন করতে হবে। এবং সভাপতি যে ভাবে বলেন, সেভাবে নিতে হবে। নতুবা তিনি আমাকে আমার কোন মালামাল দিতে পারবেন না।

৬। মালামাল গুলো আনার জন্য সভাপতির কাছে কল দিলে, তিনি প্রথমে আমাকে শিক্ষক নামের কলঙ্ক-তলঙ্ক, ইত্যাদি অনেক মন্দ-সন্দ বলেন। 

পরে বলেন কিনা, আমাকে দুই মাসের বেতন ফেরত দিতে হবে। আমি বললাম, আমি মাত্র ১১ দিনের বেতন পেয়েছি। তিনি বললেন, ঐ ১১ দিনের বেতন আমাকে ফেরত দিতে হবে। এবং ঐ ১১ দিনের বেতন ফেরত দিয়ে আমাকে আমার খেতা-বালিশ নিয়ে আসতে বলেন। 

আমার প্রত্যেকটি মাল দামী পর্যায়ের এবং প্রায় নতুন ও আমি নিজেও নির্দোষী। 

কমপক্ষে আমার ৯০০০ (নয় হাজার) টাকার মালকে এবং আমাকে, তিনি খেতা বালিশ বলে, আমাকে চরম অপমান করেছেন।

৭। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করছি যে, কাউমি মাদ্রাসা গুলোতে পাওয়া যায়, জেনারেল টিচারদের সাথে হুজুরদের চরম বৈষম্য, তাচ্ছিল্য ও দূরুত্ব মূলক আচরণ। 

টিচার, বাঙ্গালের মতো চললে হয়তো বিষয়টা বুঝে আসে না, কিন্তু রেয়ারলি কোন টিচার যদি আল্লাহ ওয়ালা হয়, তখন ঘটে বিপত্তি, তখন তাকে ভূগতে হয়, চরম একাকিত্বে। 

যদি স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে, কোন জেনারেল টিচার আলেমের মতো জীবন-যাপন করেন, তখন এ হুজুরেরা তাকে কাছে না টেনে, তাকে ভালো না বেশে, বরং বিপরীত পক্ষের মতো দূরে ঠেলে রাখেন এবং এর প্রতিক্রিয়া সরুপ ছাত্রদেরও একধরনের অবহেলা ও অপমানমূলক ব্যবহার সহ্য করতে হয় ঐ জেনারেল টিচারকে। 

যেন স্কুল-কলেজে পড়ে ইসলামী জ্ঞান শিক্ষা করা ও আমল করা তার অপরাধ! 

তার উপর টিচারেরাও যে মাদরাসার এ ছাত্র গুলো (যাদেরকে পড়ানো হয়) থেকে সম্মান পাওয়ার উপযুক্ত; মাদরাসার এ ছাত্র গুলোর মাঝে, এ বিষয়ক শিক্ষারও রয়েছে যথেষ্ট অভাব; যা প্রায় শূন্যের কোঠায়। 

আমি মনে করি, এ অশিক্ষা বা কূ-শিক্ষাটি তাদের হুজুরদেরই বিষফল। যা মাদরাসা বা মুসলিম শিক্ষার অংশ হতে পারে না। 

যদিও এ মাদরাসায় এটি কম ছিলো, তবুও এ ক্ষেত্রেও, এ মাদরাসায়ও, এ বিষয়েও, আমি কম বৈষম্য আর অপমানের স্বীকার হইনি।

এ বিষয়টি যে শুধু, এ মাদরাসায় (অবশ্য এ বিষয়টি এ মাদরাসায় কম ছিলো, তবুও ছিলো), তা কিন্তু নয়; এটা আমি, যে কয়টি কাউমি মাদরাসায় গিয়েছি, কম-বেশি প্রায় সব জায়গায় দেখতে পেয়েছি এবং চরম আকারেই দেখতে পেয়েছি। অবশ্যই এটি ইসলাম শিক্ষার বিপরীত। 

এটা কি অহংকারীত্ব আর বড়ত্বের প্রতিযোগিতা, না হুজুর আর বড় লোকদের, সেফটি আর ব্যক্তিত্বের বিষয় (!); তা আসলে আমি এখনো ভালোভাবে বুঝতে পারছি না! তবে একটা মানসিক কষ্টে যে ভূগেছি, বা ভূগেছিলাম, তা কিন্তু সত্য! 

চাকুরীতে যোগদান করে, এতো অল্প সময়ে আবার ছেড়েছি কেন?

মাগরিবের পর মাদরাসার মুফতি সাহেবের রুমে ছাত্রদেরকে পড়ানোকালীন, একজন ছাত্র বাড়ি থেকে দেরী করে এলে, মুফতি সাহেব আমায়, বললেন, "একে খুব বেশি করে মারেন, পিটান। এতো এতো বেত দেন। সব রিক্স আমার"।

আমি ছেলেটিকে এক বেতও দিই নাই।

তারও প্রায় ১০ মিনিট পরে আরেকজন ছাত্র এলে, তখন হুজুর কিছু বললেন না; কিন্তু আমি তাকে কয়েক বেত লাগিয়ে দিই। বেশি পিটাইনি ভাই। ছামড়ায় কোথাও দাগও লাগেনি। হয়তো বড় জোর হালকা মধ্যম আকারের/কখনো তীব্র আকারের নয় বা ছাত্রের প্রতি রাগ দেখিয়ে বা তাচ্ছিল্য করে নয়! এ রকম হালকা মধ্যম সর্বোচ্ছ ৬/৭ বেত হবে হয়তো!

 সাধারণত আমি ছাত্রদেরকে মারি না; ফলে ছাত্ররা আমার কাছে লাই পায় এবং ছাত্রদেরকে পড়াই ভালো ও আদর করি, এ জন্য ছাত্ররা আমার ক্লোজ হয়ে যায় এবং পছন্দ করে। আবার ক্লাসে বিশৃঙ্খলাও করে।

কিন্তু সেদিন কয়েকটা বেত দিয়েছি, এর কারণ হলো, আসলে আমার ক্লাসে, আরেকজন টিচার আমায় ডিরেকশন দিচ্ছিলো, এর প্রতিবাদ করেছিলাম! যেহেতু আমার ক্লাসে আরেকজন ডিরেকশন দিবে, এ রকম সিটোয়েশনে এর আগে কখনো ক্লাস করিনি। 

এছাড়া তারা আমায় বেতন কম দেয়ায়; এবং জেনারেলী মাদরাসায় অংক, ইংরেজীর গুরুত্ব কম থাকায়; আবার আমি বাঙ্গাল টিচার হওয়ায় ও আমি আন-কমন ভালো মানুষ (গায়েবী আচরণ/ফেরেশতা বা জ্বীন দ্বারা মোহান্ধ মূলক) এবং অতিরিক্ত নেক আমলকারী ও ভালো মানুষী হওয়ায় ছাত্ররা আমাকে সম্মান করলেও, অনেক সময় তাচ্ছিল্য মূলক ব্যবহার করতো বা আমার তামাসা চাইতো বা আমায় ভালোভাবে মান্য করতো না এবং এ কারণে শারীরিক-মানসিক ভাবে আমি প্রায় অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম।

এ অসুস্থতা বা শরীরিক অক্ষমতার কথা, আমি পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করেছিলাম।

তবে চাকুরী ছেড়ে দেয়ার পিছনে, এ সামান্য রকম মারার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিটি ছিলো হয়তো একটি উপলক্ষ মাত্র, মূল কারণটি ছিলো হয়তো শারীরিক অক্ষমতা বা অন্য কিছু। পড়ায় অব্যাহত থাকুন; যা পরে লিখবো ইনশা'আল্লাহ।

যে ছেলেটিকে মেরেছিলাম, রুমের বাহিরে একটু দূর থেকে ছেলেটির বাবা বিষয়টি দেখতে পেয়ে, তিনি তেড়ে চলে আসেন এবং রাগান্বিত ভাষায় বকাবকি করেন ও আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। 
ইনশা'আল্লাহ আমি ব্যক্তিত্ববান ও সম্মান নিয়ে চলি। যে ছেলেকে পড়াবো, আমার পড়ানোর উপর ভিত্তি করে ছেলেটি জীবন গড়বে। দুনিয়া ও আখিরাত পাবে; অথচ তাকে মারতে হবে, এবং মারের জন্য গাড়িয়ানের বা কর্তৃপক্ষের নানাবিধ বাজে কথা শুনতে হবে; এ রকম বাজে টিচার আমি নই!

যা আমার ব্যক্তিত্বে বাধে এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিই যে, আমি পদত্যাগ পত্র দেব এবং চাকুরী ছেড়ে দেবো। হ্যাঁ, আমার পদত্যাগ পত্র দেয়ার  ক্ষেত্রে মানসিক উৎপত্তি ও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত, এখান থেকেই।

অবশ্য পরের দিন সকালেই, আবার আমার কাছে ছেলেটির বাবা, মাদরাসার বড় হুজুরের সাথে এসে ক্ষমা চান ও পদত্যাগপত্র প্রত্যাক্ষান করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আমি রাজী হইনি।

বলাবাহুল্য, মাদরাসার সকল ছাত্র এবং সকল শিক্ষক চেয়েছিলেন, আমাকে তারা রাখবেন, যেভাবে হোক রাখবেন, কারণ আমি তাদের পছন্দের, আমি ভালো পড়াই, আমি ভালো মানুষ, ইত্যাদি!

অবশ্য এখন স্বীকার করবেন কিনা আমি জানিনা, যেহেতু এখনতো আমি তাদের স্বার্থের পরিপন্থী হয়ে গেলাম। এবং এখন অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে।

আসুন এবার মূল ব্যাখায় যাই, কেন আসলে আমি এ চাকুরীটি ছেড়ে দিয়েছিলাম বা এতো ঘন ঘন কেন চাকুরি ছেড়ে দিচ্ছিলাম!

প্রিয় ভায়েরা, আপনারা জানেন, আমি প্রায় গত ২৪ বছর, একটি অলৌকিক শক্তির প্রভাবে, মনেহয় যেন অনেকটা আমার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে, কোন অশরীরী শক্তি দ্বারা তাড়িত হয়ে জীবন-যাপন করছি। যা আপনারা এ ব্লগের (বা এখানে ক্লিক করে) অন্যান্য সিমিলার কন্টেন্ট সমূহ পড়লে বুঝতে পারবেন।

এরই মধ্যে একেবারে মান সম্মত না হলেও, তবুও কয়েকটি চাকরি ধরেছি এবং ছেড়েছি। সব জায়গায় যে, একেবারে জুলুমের স্বীকার হয়েছি, তা কিন্তু না! ২/১ টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া, বাঁকি সব স্থানেই কর্তৃপক্ষ আমাকে হাসিমুখেই বিদায় দিয়েছিলেন। তবে এ প্রতিষ্ঠানে এবং আর ২/১টি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি ছেড়েছিলাম ঐ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আমার উপর এবং কর্মচারিদের উপর জুলুমের প্রতিবাদ করতে গিয়ে। 

আবার মূলত আরো ভালো চাকুরী পেয়েছি বা পাবো সেই হেতু এবং আমার সেই অলৌকিক কারণে আমাকে মোহান্ধ করে রাখার কারণে বা এর প্রভাবে, একটা না একটা কারণকে তুলে ধরেই চাকুরীগুলো ছেড়ে ছিলাম। 

আসলে আমার সেই অলৌকিক কারণটি আমাকে শিক্ষা দেয়ার জন্য বা বিভিন্ন স্থানের সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও পরিবেশগত শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যেই হয়তো আমাকে এতো চাকুরী ধরিয়েছিলো।

তবে সবমিলিয়ে আমার সেই গায়েবী কারণ বা কোপালের লিখন, এখন থেকে মনেহয়, ভালোকোন কর্ম ধরতে পারলে, আর মনে হয়, চাকুরী ছাড়বেন না। যেহেতু ইনশা'আল্লাহ আমার সেই অলৌকিক কারণটির প্রভাবেই এবং আমার জীবনের একমাত্র টার্গেট আল্লাহর বন্ধু হতে চাওয়ার ফলেই, ইতিমধ্যে আমি নিজ পরিবার ও বংশের সাথে মিশে যাওয়ার ঘোষণা ও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি। 

যেহেতু পরিবার ও বংশের মধ্যে আমি আমার মানসিক অবস্থান চেঞ্জ করেছি, তাহলে ইনশা'আল্লাহ, আমার মনেহয় এ চেঞ্জ জীবনের সর্বক্ষেত্রেই অব্যাহত থাকবে বা থাকতে পারে।

বন্ধুরা, আপনারা একটু লক্ষ করলে দেখতে পাবেন, মানিকপুর মাদরাসা কর্তৃক আমাকে যে নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছিলো, তা ছিলো আমার প্রতি, অবমূল্যায়ন, চোষণ ও জুলুম মূলক এবং তা মোটেই ইসলাম সম্মত ছিলো না। 

তবুও আমি আমার দূর্বলতার কারণে (অর্থনৈতিক), অনেকটা প্রাণ বাঁচাতে, মিথ্যে করে রাজী আছি বলে নিয়োগ পত্রে স্বাক্ষর করে যোগদান করেছিলাম; আমার কোপালের লিখন হয়তো ঘুমন্ত ছিলো। আপনারা জানেন এ কোপালের লিখনটিই বা গায়েবী কারণটিই অনেক সময় আলাদা শক্তি হিসেবে আমার নিকট দৃশ্যমান হয়। যা অনেক সময় আমার ইচ্ছার বাইরেও বা আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরেও কাজ করে।

তো যোগদানের অল্প কয়দিনের মাথায়ই আমার সে অলৌকিক কারণটি আমায় মহান্ধ করার কারণে, আমার কাছে, আমার প্রাণ প্রিয় মাদরাসার বিভিন্ন অনিয়ম দৃশ্যমান হয় বা হতে থাকে এবং আমার মন-মগজে দুনিয়াবি সাইড লেস হয়ে, আমি শুধু আল্লাহমুখী হয়ে যাওয়ায়, মাদরাসার এসব অনিয়মকে সংশোধনের লক্ষ্যে জনসম্মুখে ফুটাপ করার উদ্দেশ্যে, কর্তৃপক্ষের হুশ-জ্ঞানে আনতেই মূলত মনেহয় আমি পদত্যাগ করেছি। 

কারণ বরাবরই আমার ক্ষোভ ছিলো, এটি একটি মাদরাসা, ইসলামি শিক্ষার বিদ্যাপীঠ, তাহলে এখানেই যদি এভাবে অন্যায় ও অবিচার হয়, তাহলে সার্বিক ভাবে মাদরাসা এবং ইসলাম ও মুসলিম চরিত্রতো বরাবর নিম্নমূখী হতে বাধ্য।

যেহেতু চরিত্রই হচ্ছে, একটি জাতির পরিচয় ও উন্নয়নের মূল এবং আল্লাহু তা'য়ালাকে পাবার মূল ভিত্তি; আর তাই আমি হয়তো এসবের প্রতিকার চেয়েই মূলত পদত্যাগ করেছিলাম।

মানিকপুর মাদরাসা কর্তৃক আমার প্রতি যেসব অবিচার করা হয়েছে, তা  মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে, আমার প্রতি কেন জুলুম হবে না?

মাদরাসার মোহতামিম হুজুর বা সভাপতি, আপনি বা আপনাদেরকে দোষী করে লিখা, নিম্নোক্ত বিষয় সমূহকে যদি আমার প্রতি জুলুম মনে না করেন; তাহলে,  কমেন্টস এর মাধ্যমে এর বিপরীত যুক্তি  প্রদান করুন যে, মাদরাসার কর্তৃপক্ষ হিসেবে আপনি বা আপনারা, এ বিষয় গুলোতে দোষী বা দায়ী নয়। 

১। আপনি বা আপনারা আমার বেতন ধরেছেন মাত্র ৬০০০ টাকা। এ বিষয়ে প্রথমেই আমি আপনাদেরকে খাঁটি মুমেন নয় বলে সাব্যস্ত করছি, যেহেতু আল-কোরআন ও আল-হাদীসে বলা হয়েছে-

আল্লাহতায়ালা বলেন, নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। (সূরা হুজুরাত, আয়াত-১০)। 

রাসূল (সা.) বলেন, শ্রমিক/তোমাদের অধীনস্থরা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং, যার ভাইকে তার অধীন করেছেন, সে যেন তাকে তা-ই খাওয়ায়, যা সে খায়। সেই কাপড় পরিধান করায়, যা সে পরিধান করে এবং তাকে সামর্থ্যরে অধিক কোনো কাজের দায়িত্ব দেবে না, যদি এমনটা করতে হয়, তাহলে সে যেন তাকে সাহায্য করে (সহিহ বোখারি-৫৬১৭)।

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে, যা নিজের জন্য পছন্দ করে। (সহিহ বোখারি, কিতাবুল ইমান, ই.ফা-১২)।

উপরোক্ত হাদীস অনুযায়ী বলুন, কোন্ পরিমাপের ভিত্তিতে বা কোন্ মানডন্ডে আপনারা একজন শিক্ষকের জন্য এতো কম মানের বেতন নির্ধারণ করেন? আপনারা যত চেষ্টাই করেন না কেন, বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বিবেচনায় এ বেতনে আপনার সংসার চালাতে পারবেন?

আর যদি না পারেন, তাহলে উপরোক্ত কোরআন-হাদীস অনুযায়ী, একজন মুমেন হিসেবে, আপনি আমার ভাই কী করে হবেন? 

আপনি যা খাচ্ছেন, আপনি কি আমায় তা খাওয়াচ্ছেন (?); বা আমার জন্য তা কি আপনি পছন্দ করছেন (?); যা আপনি নিজের জন্য পছন্দ করেন? 

ফলে হাদীস অনুযায়ী আপনি বা আপনারা আমার ভাই হতে পারেন না এবং খাঁটি মুমেনও হতে পারেন না! 

ভাই,  আমি মুফতি না, আপনি বা আপনারা মুফতি; তাহলে উপরোক্ত হাদীস অনুযায়ী আপনি প্রমাণ করুন যে, আমি মুমেন হিসাবে, যদি হাদীস অনুযায়ী আপনি আমার ভাই হতে না পারেন, তাহলে আপনি মুমেন কিভাবে হবেন? মুমেন, আরেক মুমেনের ভাই হবে; আর ভাই হতে না পারলে, তাহলে সে মুমেন কী করে হয়? এবং আপনি নিজের জন্য যা পছন্দ করেন, যা খান, পরেন; অধীন্থ কর্মচারী হিসেবে, আমার জন্য যদি তা পছন্দ না করেন, তাহলে খাঁটি মুমেন কিভাবে হবেন? আপনার উত্তরের স্বপক্ষে কোরআন-হাদীসের উদৃতিসহ যুক্তি দেখান।

এবার নিম্নোক্ত হাদীসটি লক্ষ করুন, যেখানে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলছেন, ‘যথোপযুক্ত খাদ্য ও পরিধেয়, মালিকানাধীন (বা অধীন) ব্যক্তির প্রাপ্য।’ (মুয়াত্তায়ে মালিক, হাদিস : ৪১)

আপনাদেরকে বলি, এ বিচারটি কার? এটি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর, তাই না? তো আপনাদের দেয়া ৬০০০ টাকা দিয়ে, তিনি (সাঃ), যে বললেন, যথোপযুক্ত খাদ্য... , এটি কি সম্ভব? তবে কার নির্দেশ বা কার বিচার অমান্য করছেন? 

তাহলে আপনারা নিজেরা যদি, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এঁর বিচার না মানেন, তাহলে আমাদের ছেলেরা আপনাদের কাছে কী বা কেমন শিখবে? নিজেরা ভোগ করবে, আর বাকিদেরকে উপহাস করা শিখবে, এইতো!?

বাচ্চাদেরকে কিতাব বেশি আসর করবে (?); না ব্যবহার বা আমল বেশি আসর করবে? 

২। এই বেতন দিয়ে, আপনি আমায় শর্ত দিলেন যে, আমাকে পূর্ণ ২ বছর চাকুরী করতে হবে। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন না; আমার ভিতর যোগ্যতা বা প্রতিভা রয়েছে! এভাবে প্রত্যেকটা মানুষের ভিতরেই যোগ্যতা বা প্রতিভা থাকে।

অপরদিকে কর্মচারীকে দুই বছর চাকুরী করতে হবে, এ রকম শর্ত দেয়া যাবে কিনা, তা সরাসরি কোরআন-হাদীসের কোথাও না থাকায়; পক্ষান্তরে কর্মচারীকে বা একজন মুমেনকে তারকৃত ওয়াদা বা শর্ত সমূহ মেনে চলতে কোরআন হাদীস থেকে নির্দেশ থাকায়; আর আপনারা শরীয়তের এ ফাঁকটুকুকে বা কোরআন-হাদীসে যে সব বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখা দেয়া হয়নি, এ রকম একটি বিষয়ে, এবং আমার দূর্বলতার সুযোগে, আমাকে দুই বছরের একটা বাইন্ডিং দিলেন।

আর আমাকে সরল মনে করে, আমি ওয়াদা পালন করবো, আর আপনারা হাসবেন। একজন মানুষ থেকে জাতি, কিছু একটা যে পেতো; তা আপনারা বুদ্ধি, কৌশল আর শুধু নিজেদের স্থুল স্বার্থের কারণে রুদ্ধ করে দিবেন; এ বিষয়টি কতটুকু সঠিক বিচার বা ইসলামিক ফতোয়া হয়েছে আপনাদের? 

শুধু আমি কেন, যে কোন মানুষের ক্ষেত্রেই কি, এ ধরনের ২ বছরের বাইন্ডিং দেয়াটা কি ইসলাম সম্মত?

আমিতো মনে করি, আপনারা কর্মচারীকে এতো সময়ের বাইন্ডিং দিয়ে বা অতীত থেকে দিয়ে এসে (বা যদি দেন বা দিতে থাকেন); মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছেন। এবং এ জন্য আপনাদের শাস্তি পাওয়া উচিৎ। 

এ বিষয়ে আপনি বা আপনারা যদি নির্দোষ দাবী করেন, তাহলে আপনার উত্তরের স্বপক্ষে তথ্য, সূত্র ও যুক্তি সহকারে বিবৃতি উপস্থাপন করুন।

৩। নিয়োগপত্রে আপনারা আমাকে শর্ত দিয়েছেন, চাকুরী হতে পদত্যাগ করতে হলে, ২ মাস আগে জানাতে হবে, অন্যথায় ২ মাসের সমপরিমাণ বেতন, মাদরাসা ফান্ডে জমা দিতে হবে; হয়তো এ কারণেই আমার মালামাল গুলো কেডে রেখেছিলেন।

অপরপক্ষে আপনারা আমায় বিদায় দিতে চাইলে ১ সপ্তাহের নোটিশেই বিদায় দিতে পারবেন বা আমাকে চলে আসতে হবে।

আপনাদের যেমন ছাত্রদের পরীক্ষা বা মাদরাসার গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকতে পারে; তেমনি শিক্ষক হিসেবে আমারওতো শারীরিক অসুস্থতা বা পারিবারিক বা মানসিক বিপর্যয় ইত্যাদি থাকতে পারে।

তাই যেহেতু আপনারা এক সপ্তাহের নোটিশে আমাকে বরখাস্থ করতে পারেন বা চাকুরী ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে পারেন; তেমনি আমিওতো আপনাদেরকে এক সপ্তাহের নোটিশে চাকুরী ছেড়ে দিতে পারি।

আপনারা আমার বিপক্ষে যা পারেন, আমি কেন আপনাদের বিপক্ষে তা পারবো না? দয়া করে বুঝিয়ে বলবেন যে, এ বৈষম্যের কারণ কী?

আমার, আর আপনার যে সম্পর্ক, তা কি মালিক আর দাসের বা চাকরের সম্পর্ক, সে জন্য? 

যদি সে রকম না হয়; তাহলে কেন এতো ব্যবধান; চুপ না থেকে, তা অবশ্যই বুঝিয়ে লিখবেন?

আমি মনে করি, আপনাদের এ ধরনের আরোপিত চুক্তি মূলক সিদ্ধান্ত, শিক্ষক হিসেবে আমার বা আমাদের উপর জুলুম ছাড়া আর কিছু না!

আর এর প্রতিবাদ করতেই, আমি পদত্যাগ পত্র জমা দিই, যা আমি মৌখিক ভাবে বলেছিও।

যেহেতু আপনাদের জুলুম নির্ভর আইনের প্রতিবাদ করতে; এ ধরনের জুলুম সমূহকে (উপরে বা নিচে উল্লেখিত অন্যান্যগুলা সহ) জন সম্মুখে ওপেন করতে এবং এ ধরনের জুলুম থেকে মানুষদেরকে হেফাজত করতে আমি পদত্যাগ করেছি; তার উপর আমি পাঠদান করতেও শারীরিক-মানসিক ভাবে অনেকটা অক্ষম ছিলাম। এবং যেহেতু আমারই ক্লাসে আরেকজন ডিরেকশন দিয়ে এবং ছাত্রদের মাঝেও বাবার অবস্থানে ছেলেকে মূল্যায়ন করে ছাত্রদের মাঝে একটা বৈষম্যের শিক্ষা দিয়ে এবং যার পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে নিরপরাধ ছাত্র পিটাতে হলো ও ছাত্রের গাড়িয়ান আমাকে রাগ দেখালো ও মন্দ-সন্দ বললো; আর যা ছিল পুরো একটি সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিপরীত এবং যেহেতু আমাকে নিয়ে যথেষ্ট উদ্দেশ্যমূলক কথা বার্তা হতো, যেহেতু আমি অলৌকিক একটি কারণে অনেকটা মহান্ধ ছিলাম; তাই অসুস্থ একটা লোক কিভাবে পাঠদান করতে পারে?

এ সব যৌক্তিক কারণ হেতু, আমি সবাইকে মুখে জানিয়ে এবং পদত্যাগপত্র জমাদেয়ার পর, এর ২য় দিনের দিন চলে আসি।

এতে আমি মনেকরি, চাকুরী ছেড়ে দেয়া আমার পক্ষে মোটেই অযুক্তিক হয়নি। এবং আমি কোনরুপ অন্যায় করিনি। বরং এর মাধ্যমে হয়তো এ মাদরাসা বা অন্যান্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষের শিক্ষাও হতে পারে।

ফলে আমি আপনাদের নিকট নভেম্বর ২৪; এ মাসের ১৭ দিনের বেতন প্রাপ্য আছি। অতএব ৬০০০ টাকা হিসাবে আমার ন্যায্য ১৭ দিনের বেতন, আমাকে প্রদান করার জন্য আমি আবেদন জানাচ্ছি।

অথবা আপনি বা আপনারা কোরআন-হাদীস ও যুক্তি দিয়ে আমি ও আমাদেরকে বুঝিয়ে বলুন যে, কেন আমার চাকরি ছেড়ে দেয়া অবৈধ হবে এবং কেন আমার ১৭ দিনের বেতন না দেয়াটা আমার উপর জুলুম হবে না? বা কোন্ যুক্তিতে আমার ১৭ দিনের বেতন না দেয়াটা, আপনি যুক্তি সঙ্গত ও ন্যায় বিচার মনে করছেন? এবং দিবেন না? তা অবশ্যই বুঝিয়ে লিখবেন।

 যদি আপনি সঠিক উত্তর দিতে না পারেন, এবং যদি আমার প্রাপ্য আমাকে ফেরত দিতে রাজী না থাকেন; তবে সম্মানীত মুফতী সাহেব, আপনি অবশ্যই নিম্নোক্ত হাদীসের মোকাবেলা করতে প্রস্তুত থাকুন-

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে কাউকে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার পর তার থেকে কাজ বুঝে নিয়েছে অথচ তার প্রাপ্য দেয়নি। কেয়ামতের দিন আমি তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দেব। (সহিহ বোখারি-২২২৭)।

আপনারা ভালো করেই জানেন, মুসলিম জাতি, আজ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পদে পদে মার খাচ্ছে। আমাদের এ জাতীয় নিম্নমুখীতার জন্য, নিম্নোক্ত হাদীস অনুযায়ী আমি আপনাদেরকেও দায়ী বা শামীল করছি। যেহেতু মুসলিমদের আপনারা শিখাচ্ছেন এবং জাতি আপনাদেরকে মানে; আমাকে নয়।

আপনাদের থেকে শিক্ষা পেয়েইতো, জাতি আমল করছে। তাই যেহেতু আপনাদের চরিত্র, এ রকম এবং চরিত্রই হচ্ছে মুসলিম উম্মার মূল শিক্ষা এবং এটি কাব্যিক নয়, এটি ব্যবহারিক শিক্ষা। 

এটি শিখাতে বই লাগেনা; নির্দিষ্ট ছাত্র লাগেনা; মানুষ আপনাদের সংস্পর্শে এসে অটো ভাবে এটি শিখে যায়। 

তাই আজকের এ দিনে, শিক্ষকদের সাথে এ জাতীয় আচরণ গুলো, যদি তাওবা করে পরিহার করার সিদ্ধান্ত যদি গ্রহণ না করেন; তবে আপনি বা আপনারা যুক্তি দিয়ে লিখুন যে, মুসলিম জাতির এ অধঃপতনের পিছনে আপনারাও কেন দায়ী থাকবেন না?

মহানবী (সা.) এই ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যে জাতির দুর্বল লোকেরা জোরজবরদস্তি ছাড়া তাদের পাওনা আদায় করতে পারে না সেই জাতি কখনো পবিত্র হতে পারে না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪২৬)

আর অপবিত্র জাতীই ব্যাকওয়ার্ডে যাবে; এটিই স্বাভাবিক। এবং এর কারণ আপনারাও।

৪। মাদরাসার মোহতামিম হুজুর, জনাব মুফতী ইয়াছিন বিন আহমাদ, দয়া করে আপনি বলুন, আপনি কেন আমার কমপক্ষে ৯০০০ টাকার মালামাল আমাকে আনতে দেননি। এবং আপনি আমায় সম্মান করতেন ও ভালোবাসতেন, আমিও আপনাকে তদ্রুপই করতাম, বরং একটু বেশিই করতাম, সে সূত্রে যখন আমি আপনাকে ফোন করে বলি, "মালগুলো নিতে আসবো, না বেড়াতে আসবো", তখন আপনি আমার মুখের উপর বলে দিলেন, "আমার মতো এ রকম বাজে লোককে মাদরাসা থেকে মেহমানদারি করানো উচিৎ হবে না"।

তাই এখন সম্মানিত ভিউয়ারদেরকে আপনি বলেন যে, আমার কী অপরাধ ছিলো? এখানে আপনাদের অপরাধ (?); না, আমার অপরাধ!?

আমি কি কউমি মাদরাসা শিক্ষাকে ভালোবাসি নি(?); অল্প কয়দিনের জন্য হলেও আমি কি এ ছাত্রদেরকে পড়াইনি? 

আমি চলে আসার সিদ্ধান্ত নেয়ায় এবং আমার মালগুলো কেড়ে নেয়ার পরে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র হাফেজ শোয়াইব কেন তাহলে মাদরাসা থেকে চলে যেতে চাইছিলো? পরে আমি তাকে বুঝিয়ে বলায় এবং তার ফোন নাম্বার, আমি সেভ করায়, সে শান্ত হয়। জানিনা তখন সে আমায় কী পরিচয়ে দেখতে পেয়েছিলো।

আমার পদত্যাগের পিছনে যদি আপনি বা আপনাদের সিস্টেম বা মূল্যায়নই যদি দায়ী হয়, তাহলে মাদরাসা প্রধান হিসেবে, আপনার কাছ থেকে এ ধরনে অপমানমূলক ভাষা আমাকে শুনতে হলো কেন?

দয়া করে বুঝিয়ে লিখুন অথবা এ বিষয়ে আপনি নিজকে নির্দোষ প্রমাণ করুন।

সম্মানীত মুফতী সাহেব, আপনাকে একটা প্রশ্ন করি; আশা করি সত্য উত্তর দিবেন।

আমি যদি আপনার মাদরাসায় ভালো না পড়াতাম, ছাত্রদের প্রিয় শিক্ষক না হতাম বা যে কোন দিক দিয়ে আপনাদের অপছন্দনীয় হতাম; তাহলে কি আপনারা আমায় বিদায় দিতেন না!? 

এবং যদি বিদায় দিতেন, সে ক্ষেত্রে, আমার কোন মালামাল কি আপনারা কেড়ে রাখতেন!? (ঘোর কোন অপরাধ না করলে)।

এর সরল উত্তর হচ্ছে রাখতেন না।

তাহলে আমার মালামাল কেড়ে রাখার পিছনে আলহামদুলিল্লাহ, আমার ভালো পড়ানো এবং ভালো মানুষ হওয়াটাই কি দায়ী না? 

আচ্ছা মুফতী সাব, আপনি বলেন না তাহলে, আমার মালগুলো কেন কেড়ে রেখেছেন বা খারাপ পড়ালে কেড়ে রাখতেন কিনা?

 ভালো পড়াতে না পারলে, ছাত্রদের পরীক্ষা হোক আর যাই হোক; আমার কাপড়-চোপড় কী কী আছে, সব কিছু সহ আপদ পরিষ্কার বা দূর করতে পারলেই বাঁচতেন; তাই না?

কিন্তু বিপত্তি ঘটলো কোথায়? আমি ভালো পড়াই, আমার আগে আমার মতো টিচার আর পান নাই; আমার সাথে ফেরেশতা থাকে বা আমার কাশফ খোলা, এসব না? 

আপনি আসলে আমাকে রেখে দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন; আপনি যদি সত্য বলেন, তবে আমি আসলে ভূল বলিনি। 

শুধু আপনি না, মুফতী সাব হুজুরও চেয়েছিলেন, আমাকে রেখে দিতে।

আসলে জীবনে আর কোথাও কেউ, সমাজের মধ্যে এভাবে করে আমার গুণ প্রকাশ করে নাই বা আমাকে ভালোবাসে নাই। 

অবশ্য এর আগের মাদরাসাতেও আমি ভালো শিক্ষক ও আল্লাহর অলি হিসেবেই স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। 

কিন্তু কোপালের লিখন অনুযায়ী, সেখান থেকেও আমাকে চলে আসতে হয়েছে। সেখানে অবশ্য বেতন ১০,০০০ এর উপরে দিতো।

আমাকে রাখতে চেয়ে, আমি যখন কিছুতেই রাজী হচ্ছিলাম না, তখন দিশা না পেয়ে, আমার মালগুলো আঁটকিয়ে ছিলেন। 

ভাবছিলেন, মাল আঁটকিয়ে ফেললে হয়তো আমি থেকে যাবো। নিজ মনের সাথে, যদি মিথ্যা স্বাক্ষ না দেন, তাহলে বলুন, আমি কি মিথ্যা বলেছি!? 

আচ্ছা, সবকিছু সভাপতিকে বলতে হবে কেন? সভাপতির কাছে কেন এতো নিজকে ক্রেড়িটেবল রাখতে হবে? যার জন্য হয়তোবা আজকে আমার এতোগুলো মালামাল আমায় দিতে পারছেন না বা দিচ্ছেন না।

যাক, আপনি এবং আপনার মুফতী সাব হুজুর ভালো থাকেন। মাদরাসার বাকী হুজুরেরাও ভালো থাকুক।

চেয়েছিলাম আপনাদের এলাকায়/মাদরাসায় আবার যাই। কিন্তু আপনিতো আমায় সে সুযোগ দিলেন না; উল্টো অপমান করলেন।

তবুও সাধারণ মানুষ সবাই আমাকে না চিনলেও, আপনাদের ভালোবাসা আমার মনে থাকবে চিরকাল।

কিন্তু কথা হচ্ছে, আমার মালামাল গুলোতো দিতে হবে হুজুর! 

নতুবা যতই আপনাদেরকে আমি ভালোবাসিনা কেন, জুলুমবাজ হিসেবে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে, চুল পরিমাণ কম হোক, এটিও আমি চাইবো না।

এবং নিম্নোক্ত হাদিস অনুযায়ী আপনারা রাসূলের (সাঃ) অবাধ্য এবং প্রকৃত মুসলিম নয়, বরং জুলুমবাজ; এ কথা আমি বলতে পারি। না হয়, আপনারা এ হাদীস সমূহের ব্যাখা দেন-
১। হাসান আল হুলওয়ানী ও আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ......... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) –কে বলতে শুনেছি যে, সত্যিকার মুসলিম সেই ব্যক্তি যার মুখ ও হাত থেকে অন্যান্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। (সহীহ্ মুসলিম, অধ্যায় ঈমান, পরিচ্ছেদ ১৪, হাদীস নং ৬৯)
অথবা
আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলিম। আর যাকে মানুষ তাদের জান ও মালের জন্য নিরাপদ মনে করে সে-ই প্রকৃত মুমিন। (তিরমিজী ২৬২৭)

২। রাসূল (সা.) বলেছেন, 'তোমরা শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করো তার ঘাম শুকানোর আগেই' (বায়হাকি, মিশকাত)। এছাড়া যারা শ্রমিকের মজুরি আদায়ে টালবাহানা করে তাদের সাবধান করে বলেছেন, 'সামর্থ্যবান পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম বা অবিচার' (বুখারি)

প্রিয় হুজুর, এক্ষণে, আপনারা কমেন্টস সেকশনে, কমেন্টস করে আমার এই উপকার করুন যে, আপনারা আমার মালগুলো কি আসলে আমি ছাত্র পিটিয়েছি, এ জন্যে আঁটকিয়েছেন? 

যেহেতু আমার এলাকায় একটা বিষয় ছড়িয়েছে যে, আমি নাকি মেজাজ খারাপ করে অথবা আমার কাছে জ্বীন বা কী যেন আছে, সে জন্য ছাত্র পিটিয়েছি, আর সে জন্য আপনারা আমার মালামাল গুলো আঁটকিয়ে আমাকে বিদায় করে দিয়েছেন। 

দয়া করে এ বিষয়ে কিছু লিখুন, যদিও আপনাদেরকে আমি দোষী সাব্যস্ত করেছি এবং সেই হেতু আপনারা এখন আমার এন্টি বা অপজিট।

এবং যদিও ঘটনা ঘটার পর আজ প্রায় ৫ মাসের মাথায় আমি আপনাদেরকে নিয়ে লিখছি ও জুলুমবাজ হিসেবে আপনাদেরকে সাব্যস্ত করেছি এবং আমি মোটের উপর ১ মাস থেকেও ২/১ দিন কম পড়িয়েছি। তবুও সত্য কথাটি বলুন। আমার উপকার হবে। আমি মনে করি একজন মুফতী সাব হিসেবে আপনি তা সহজেই বলতে পারেন। এবং এ বিষয়ে ঐ এলাকার লোকদেরকে কমেন্টস করতে আমি অনুরোধ করছি।

সম্মানীত মুফতী সাব, আমার মুখের উপর আপনি বললেন, আমার মতো মানুষকে মেহমানদারী করানো যাবে না এবং আমার মালগুলো কেড়ে নেয়ার পর আজ প্রায় ৫ মাস অতিবাহিত হলো, কিন্তু আপনি একটি বার ফোন পর্যন্ত করেননি, অন্য কোন ওয়েতেও কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি; তাহলে বুঝা গেল আমার প্রায় কমপক্ষে ৯০০০ টাকার মাল কেড়ে নেয়া আপনার ফতোয়া অনুযায়ী উচিৎ হয়েছে এবং নিয়োগ পত্রে যে উল্লেখ করলেন, পদত্যাগ করতে হলে, ২ মাসের সম পরিমাণ টাকা মাদরাসা ফান্ডে জমা দিতে হবে; আপনার সভাপতিও মৌখিক ভাবে তাই বললো; তাহলে এখন মনে হচ্ছে, আপনারা স্ব-জ্ঞানে বুঝে-শুনেই আমার মালগুলো আঁটকিয়েছেন; তাইনা?

তারপরও ছাত্র পিটানোর কারণে আমায় বরখাস্ত করে মালগুলো আঁটকিয়েছেন কিনা, এ বিষয়ে একটু কমেন্ট করুন। কারণ যদিও আমার স্ত্রী আমি আসার পর পর বড় হুজুরের কাছে ফোন করে বিষয়টি বুঝে নিয়েছিলো, তবুও ইতিমধ্যে কয়েকজন এ বিষয়ে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

৫। সম্মানীত সভাপতি সাব, দয়া করে বলবেন কি (?); আমার এতোগুলো টাকার মালামাল আপনার কাছে খেতা-বালিশ মনে হলো কেন? এবং আমাকে যে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করলেন, এর কারণ কী? তা দয়া করে, মানুষের সামনে কমেন্টস করে লিখুন।

আপনি মাদরাসা পরিচালনা করেন। তাই নিয়ম-কানুন গুলো হতে হবে ইসলামিক ও মানবিক। 

অথচ আমাকে দেয়া নিয়োগপত্রে আরোপিত নিয়ম-কানুন গুলো মোটেই ইসলামিক নয়। বরং চোষন, অত্যাচার ও জুলুম মূলক। 

এ ধরনের জুলুম ও অত্যাচার মূলক নিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেই আমি পদত্যাগ করেছিলাম। হয়তো মাদরাসার মোহতামিম হুজুর আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। যে বিষয়টিও নিয়মের আওতাভূক্ত না।


যাক এখন কথা হচ্ছে, আমার ১৭ দিনের বেতন ও আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া মালামাল গুলো আমায় ফেরত দেন। নতুবা কেন দিবেন না, তা এ পাবলিক প্লেসে বলুন।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষের প্রতি এখন আমার আবেদন কী? 

যেহেতু আমার প্রতি জুলুম করা হয়েছে, তাই আমার আবেদন হচ্ছে, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে আমার ১৭ দিনের বেতন এবং আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া মালগুলো উপরে চার্ট অনুযায়ী আমার বাড়িতে পৌঁছায়ে দিবেন। এবং এ অত্যাচার ও চোষণমূলক আইনগুলো মাদরাসার রুলস ও রেজুলেশন থেকে পরিহার করবেন। যাতে ভবিষ্যত জীবনে আর কেউ এভাবে নির্যাতিত না হয়।

যেহেতু এখন আপনাদের নিকট আমি যাওয়া এটি আমার মান-সম্মানের প্রশ্ন ও সিকিউরিটি জনিত ভয়। 

অথবা কমেন্টস করে এর সঠিক কারণ দর্শাবেন, কেন আমার প্রাপ্য, আমাকে আপনারা প্রদান বা ফেরত প্রদান করবেন না।

বায়তুন নুর মাদরাসা ও এতিমখানা, উত্তর কডৈতলী, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর; এ কাউমি মাদরাসায় আমার প্রতি করা মানবতার বিবরণঃ

মানিকপুর মাদরাসায় যোগদানের আগে আমি এ মাদরাসায় যোগদান করেছিলাম।

এ মাদরাসার মানবতার দৃষ্টান্ত সমূহ নিম্নরূপ-

১। এ মাদরাসায় আমাকে বেডিং নিয়ে যেতে হয়নি; যেখানে মানিকপুর মাদরাসায় হয়েছিলো। 

২। এ মাদরাসায় বেতন ধরা হয়েছিলো ১০,৩০০/-; মানিকপুর মাদরাসায় ছিলো মাত্র ৬০০০/-

৩। এ মাদরাসায় ফজরের পরে এবং সন্ধ্যার পরে জেনারেল টিচারদেরকে খুব একটা পড়াতে হতো না; মানিকপুর মাদরাসায় পড়াতে হতো।

৪। এ মাদরাসায় আসরের পর নাস্তা হিসেবে বিস্কুট দেয়া হতো, মানিকপুর মাদরাসায় দেয়া হতো না।

৫। এ মাদরাসায় উপরে বর্ণিত এ ধরনের অত্যাচারমূলক কোন আইন ছিলো না।

৬। এ মাদরাসায় যোগদানের অল্প কয়দিনের মধ্যেই আমার ব্যক্তিগত কম্পিউটার রাখার জন্য বড় হুজুর ৩৫০০ টাকা ব্যয়ে আমার জন্য একটি টেবিল বানায়ে দেন। আর মানিকপুর মাদরাসায় থাকার চৌকিটিই ছিলো ভাঙ্গা।

৭। আমার বড় ভাই যখন রাত ৯ টার দিকে যখন ফোন করে বললেন, আগামীকাল ৩ টার দিকে আমার ফেনী পৌরসভায় ইন্টার্ভিউ আছে, তখন হুজুরকে বাড়িতে আসার কথা বললে তিনি নিষেধ করেননি এবং যখন চাকুরী কনফার্ম হলো তখন হুজুর বাধা দেননি। অথচ অল্প কয়দিন পরেই ছাত্রদের পরীক্ষা ছিলো এবং ছাত্রদের সব প্রশ্ন আমি করতেও পারিনি।

৮। হুজুরকে জানানোর এক সপ্তাহের মাথায় আমি চলে এলে, হুজুর মাস শেষে আমার বিকাশ নাম্বারে বেতনের টাকাটি পাঠিয়ে দেন। যা সত্যিই আশাতীত ভালো ব্যবহার ছিলো।

তাহলে মানিকপুর মাদরাসার মোহতামিম, ইনিও হুজুর; আর এ মাদরাসার হুজুর, ইনিও হুজুর!

ফতোয়া কি তাহলে দুই মাদরাসার জন্য দুই রকম হবে? 

প্রিয় পাঠক, দয়া করে আপনারা কমেন্টস করে লিখুন যে, আমাকে ১৭ দিনের বেতন না দেয়া এবং আমার কমপক্ষে প্রায় ৯০০০ টাকার মালামাল মানিকপুর মাদরাসার মোহতামিম কর্তৃক কেড়ে রাখা কি আমার প্রতি জুলুম হয়নি? 

এবং এগুলো দেয়ার বিষয়ে আপনাদের মতামত লিখে আমাকে ধন্য করুন। এ আপনাদের নিকট আমার আকুল আবেদন।

পরিশেষে মানিকপুর মাদরাসার মোহতামিম ও সভাপতিকে অনুরোধ করবো আপনারা নিম্নোক্ত হাদীসটি  পড়ুন, আমল করুন ও নিজকে হেফাজত করার লক্ষ্যে আমার ন্যায্য পাওনা আমাকে ফেরত দিন-

হজরত কাব বিন আজরাহ (রা.) বলেন, একদা রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত সাহাবিদের উদ্দেশে বললেন- তোমরা মিম্বরের কাছাকাছি হয়ে বসো। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) সবাই কাছাকাছি হয়ে বসলে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরের প্রথম সিঁড়িতে পা রাখেন এবং বলেন: ‘আমিন’। অতঃপর দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখেন এবং বলেন: 'আমিন'। অনুরূপ তৃতীয় সিঁড়িতে পা রেখেও তিনি বলেন: 'আমিন'।

বয়ান শেষে মিম্বর থেকে নবীজি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেমে আসলে কৌতূহলী হয়ে সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) জিজ্ঞেস করেন, আপনাকে তো আগে কখনো এমন করতে দেখিনি। তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখি তখন হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উপস্থিত হয়ে বললেন, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েছে কিন্তু নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারেনি সে ধ্বংস হোক। তখন আমি বললাম: 'আমিন'।

অতঃপর যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখি, তখন জিবরাইল আলাইহিস সালাম বললেন, যার নিকট আপনার নাম পেশ করা হয়েছে কিন্তু সে আপনার প্রতি দরূদ পড়েনি সে ধ্বংস হোক। তখনও আমি বললাম 'আমিন'।

সর্বশেষ যখন তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখি, তখন জিবরাইল আলাইহিস সালাম বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা মাতার কাউকে তাদের বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েছে, কিন্তু তাদের খেদমত, সেবা-যত্ন করে জান্নাতের মালিক হতে পারেনি সেও ধ্বংস হোক। তখনও আমি বললাম, 'আমিন'। (বায়হাকী: ১৫৭২)

ধন্যবাদ। সকলে ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

এ পোস্টের ট্যাগ সমূহঃ মাদরাসা শিক্ষা, কাউমি মাদরাসা শিক্ষা, কাউমি মাদরাসায় শিক্ষক জুলুম












টছঠপপঠ ফঠপফঠঠ হঠপফডঠ ঠটটডঠ